নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরে সমকামী নারী রুপা খাতুন ওরফে টিকটিক রুপসের বিষ প্রয়োগে নিহত স্কুলছাত্রী সাদিয়া হত্যা মামলার আসামীদের একজনকেই পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি ।আাসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং মামলা তুলে নেয়ার জন্য বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার পাল্টা মামলা দায়ের করে বাদীকে হয়রানি করবে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, নাটোর শহরের চৌধুরী বড়গাছা এলাকার রিকশা চালক আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে ও বড়গাছা বালিকা বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ।
তার ভাবীর বড় বোন রুপা খাতুন ওরফে রূপ। রুপা নারী হলেও পুরুষ সেজে রূপ নাম দিয়ে টিকটকে ভিডিও আপ করে। আর পুরুষের রূপ ধরে রুপা কৌশলে সাদিয়াকে তার সাথে সমকামিতায় জড়িয়ে নেয়।
তাদের সমকামিতায় এক পর্যায়ে ২১ আগস্ট পালিয়ে যায় তারা। গত ২৪ আগস্ট সকালে রুপা সাদিয়াকে নিয়ে তার নিজ বাড়িতে আসে। ওই দিন রুপা ও সাদিয়াকে কেউ গ্যাস ট্যাবলেট (ইদুর মারা বিষ) খাইয়ে হত্যাচেষ্টা করে।
আহত অবস্থায় তাদের নাটোর সদর হাসপাতালে আনে রুপার পরিবারের সদস্যরা। সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে মারা যায় সাদিয়া। তবে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় রুপা। ২৪ আগস্ট রাতে সাদিয়ার মৃত্যু হয়।
আর অনেকটা গোপনেই ২৫ আগস্ট দাফন করা হয় সাদিয়ার লাশ। শনিবার (২৯ আগস্ট) এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী ও সাদিয়ার স্বজনরা সাদিয়াকে হত্যার অভিযোগ এনে দুপুরে কানাইখালী পুরাতন বাসট্যান্ডে মানববন্ধন করে। তারা ঘটনার বিচার দাবি করে।
মানববন্ধনের খবর পেয়ে সন্ধ্যায় সাদিয়ার বাড়িতে যান নাটোর সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন। তিনি সাদিয়ার পরিবারকে মামলার জন্য বলেন।
৩০ আগষ্ট নাটোর সদর থানায় নিহত স্কুলছাত্রী সাদিয়ার বাবা রিকশাচালক আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে সমকামী রুপা খাতুন ওরফে টিকটিক রুপস,তাঁর বাবা রুবেল হোসেন,মা ববিতা হোসেন, দাদী বেনু আক্তার,বোন রিতা খাতুনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করে ।
এদিকে মামলা দায়েরের ১২ দিন পেরিয়ে গেলেই একজন আসামীকেই পুলিশ গ্রেফতার করেননি ।এদিকে, মামলা তুলে নেয়ার জন্য আসামীরা বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়া আসামীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে বলেন, আসামীরা ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার ওসি (অপারেশন) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান,সাদিয়া হত্যা মামলার তদন্ত কাজ চলছে। আসামী রুপা খাতুন ওরফে টিকটক রুপস নিজেও বিষ খেয়েছিল । এখনো সুস্থ হয়নি ।
সুস্থ হলে তাকে সহ বাঁকি আসামীদের গ্রেফতার করা হবে । তাদের ধরার জন্য সব রকমের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আসামীরা যেখানেই থাকুক অল্প সময়ের মধ্যেই ধরা পড়বে।