ফেসবুক জুড়ে ফ্রন্টলাইনার সুমন আলী

দেশ মাটি ও মানুষের সেবায় নিবেদিত প্রাণ বাংলাদেশ পুলিশ। দেশের সুসময় হক কিংবা দুঃসময়ে প্রথমে সারির যোদ্ধা হচ্ছেন তারা। মহামারি করোনার সময়ে সবাই যখন নিজ পরিবার নিয়ে ঘরে অবস্থান করছেন। সেই সময়ে নিজেদের জীবন বাজি রেখে সাধারণ জনগণের সেবায় নিয়জিত আছেন তারা। সেই বাহিনীর একজন বীর সেনা সুমন আলী। করোনা কালীন সময়ে সাধারণ জনগণকে সেবা দিতে গিয়ে হয়েছেন আক্রান্ত। এরপরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রাতে মৃত্যু বরন করেন তিনি। তার এই অকাল মৃত্যুতে সর্বত্র বইছে শোকের ছায়া। এতে শোক প্রকাশ ও স্মৃতিচারণ করছেন সকল শ্রেণি পেশার মানুষ।

এক শোক বার্তায় নাটোরে পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে জীবন দিলেন পুলিশ পরিদর্শক মো : সুমন আলী। দেশ ও জনগণের সেবায় জীবন উৎসর্গ করে তিনি ত্যাগের এক অনুপম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার প্রতি রইল শ্রদ্ধা।

করোনা যোদ্ধা সুমন আলীর মৃত্যুে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস পুলিশ জানান, নাটোরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এই প্রথম কোনো পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু হলো। তার এই অকাল মৃত্যুতে আমরা সকলে শোকাহত।

যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি তার নিজস্ব ফেসবুক আইডি লিখেছেন, ” বড়াইগ্রাম থানার পুলিশ পরিদর্শক আলী, করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আমরা তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।”

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যাল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আহম্মদ আলী মোল­া ফেসবুকে লিখেছেন, “বড়াইগ্রাম থানার ওসি তদন্ত এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এর সাবেক ছাত্র সুমন আলী করোনায় আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেছেন। করোনা যোদ্ধার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং ভালবাসা।

” সুমন আলীর মৃত্যুতে ফেসবুকে স্মৃতিচারণ করে বড়াইগ্রাম কেন্দ্রীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি অমর ডি কস্তা লিখেছেন, নিয়তি কেন এভাবে বারে বারে কাঁদায়? কেন এমন মৃত্যু হয়? তিনি ছিলেন সৎ, নিষ্ঠাবান, মিষ্টভাষী ও মিশুক প্রকৃতির পুলিশ অফিসার।

এছাড়াও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জীবন উৎসর্গ কারী ফ্রন্টলাইন যোদ্ধা পুলিশ পরিদর্শক সুমন আলীর অকাল মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন পুলিশ, সাংবাদিক, শিক্ষক, চিকিৎসক, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী সহ সকল শ্রেণী পেশার মানুষ।

সুমন আলী ২০০৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর এসআই পদে যোগ দেন। এরপরে ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তারিখে বড়াইগ্রাম থানায় যোগদান করেন। তিনি চাঁপাইনবাবঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর কদমতলা এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে। মৃত্যুকালে তার পাঁচ বছর বয়সী কন্যা ও স্ত্রী রয়েছে। এর আগে গত ২ আগষ্ট করোনা আক্রান্ত হন তিনি। নাটোরে স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা নিয়েও কোন উন্নতি না হওয়ায় ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত রাতে তার মৃত্যু বরণ করেন তিনি।