নাটোরে এলেই জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাতের সঙ্গে ছাঁটা ডাল খেতেন। তার খাবার মেনুতে থাকতেই হবে এই ছাঁটা ডাল। মুগ ডাল ঘিয়ে ভেজে তৈরি হতো ছাঁটা ডাল। আর সেই খাবার নিজ হাতে রেঁধে পরিবেশন করতেন আমার শাশুড়ি।’ নাটোরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিষয়ে জানতে চাইলে এমন দাবি করেন নাটোর ও নওগাঁর সংরক্ষিত আসনের এমপি রতœা আহমেদ।দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজনৈতিক কারণে প্রায়ই নাটোরে আসতেন। এখানে আমার শ্বশুর এবাদুল হোসেন ভুলু মিয়া, শংকর গোবিন্দ চৌধুরী, রমজান আলী প্রামানিক, রমিজ উদ্দীনসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতেন। আবার উত্তরবঙ্গে পার্টির কাজে আসলেও এখানে আসতেন। বঙ্গবন্ধু এ সময় নাটোর শহরে আমার শ্বশুরের মালিকানাধীন নাটোর বোর্ডিং এর একটি রুমে উঠতেন। বোর্ডিংয়ের একটি রুম ছিল তার রাজনৈতিক কার্যালয়। বঙ্গবন্ধু যতক্ষণ থাকতেন তার খাবার সরবরাহ করতেন আমার শাশুড়ি। এ সময় তাকে মুগ ডাল ঘিয়ে ভেজে রান্না করে দেওয়া হতো ভাতের সঙ্গে। খাবার মেন্যুতে আর যাই থাক না কেন, এই ছাঁটা ডাল তাঁর চাই ই চাই। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি স্মরণ করে প্রায়ই আমার প্রয়াত শাশুড়ি এই গল্প আমাদের বলতেন।’জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নাটোর পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলি জানান, ‘আমার বাবা প্রয়াত শংকর গোবিন্দ চৌধুরী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ঈশ্বরের পরেই শ্রদ্ধার স্থানে রেখেছিলেন। বঙ্গবন্ধু আমার বাবাকে নাটোর আওয়ামী লীগের দায়িত্বই শুধু নয়, বরং গভর্নর করেছিলেন। আমার বাবাকে তুই বলে সম্বোধন করতেন বঙ্গবন্ধু।
১৯৭১ সালের আগে এবং পরেও বঙ্গবন্ধু নাটোরে এসেছিলেন। বাবাসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নাটোর বোর্ডিংয়ে মিটিং করতেন এবং উত্তরা গণভবনে এসেও উঠতেন। এসময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়েও তিনি বৈঠক করতেন। আমি নিজেও একসময় বাবার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে গিয়েছিলাম গণভবনে। এ সময় বঙ্গবন্ধু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন।’জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মজিবর রহমান সেন্টু জানান, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে নাটোর এন এস কলেজ ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক স¤পাদক এবং সংগ্রাম পরিষদের সিটি কনভেনার ছিলেন তিনি। কলেজ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতির দায়িত্বও তিনি পালন করেছেন। ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধু নাটোরে এসে নাটোর বোর্ডিংয়ে মিটিং করেছিলেন। এসময় বঙ্গবন্ধু স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে ওই বোর্ডিংয়ে খাওয়া-দাওয়া করেছিলেন। বোর্ডিংয়ের মালিক এবাদুল হোসেন ভুলু মিয়া বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু আবারও নাটোরে আসেন এবং বড়হরিশপুর এলাকায় জনসভা করেন। এছাড়া উত্তরা গণভবনে ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি মিটিং করেছিলেন।