পান আলু পিয়াজ সবজি ও মাছসহ নানান কৃষি পন্য রপ্তানীতে রাজশাহী জেলার অন্যতম উপজেলা বাগমারার সুনাম ও খ্যাতি যখন দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। তখন সোনালী আশ (পাট) সেই তালিকায় অন্তভুক্ত হয়ে এবার বাগমারার ঐতিহ্য সুনাাম আরো বৃদ্ধি করেছে। পাটের বীজ বপনের সময় আবহাওয়া অনুকুলে না থাকলেও পরবর্তীতে সময় মত বৃষ্টিপাত হওয়াতে এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে পাট চাষীরা পাট আরোহন করে পানিতে পচানী দেওয়া পাট পরিস্কার করা ধোয়া) শুরু করেছেন। তবে ব্যাপক বন্যার কারণে পাট ক্ষেতের আশেপাশে পর্যাপ্ত জলাশয় থাকলেও পাট ধোওয়া শ্রমিক সংকটের কারণে পাট চাষীরা বড়ই বেকায়দায় পড়েছেন। বর্তমানে বাগমারায় দু’বেলা খাবার দিয়ে একজন পাট ধোয় শ্রমিকের মজুরী সাড়ে ৪শ থেকে ৫শ টাকা। সারা দিনে একজন শ্রমিক ১৮ থেকে ২০ বিড়া পাট ধুতে পারে। এছাড়া অনেকে কৃষক চুক্তি ভিত্তিক পাট ধোয়া শ্রমিক নিয়োগ করেছেন। উপজেলা কৃষি অফিস ও পাট চাষী সূত্রে জানা গেছে, বাগমারায় এবার কমবেশি সব এলাকাতেই পাটের চাষাবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার একশ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হয়ে মোট পাটের চাষ হয়েছে ১ হাজার ৯শ ২০ হেক্টর জমিতে। প্রতি হেক্টরে ২.৪ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ হিসাবে এখানে মোট উৎপাদনেরর লক্ষমাত্রা নির্ধারিন করা হয়েছে সাড়ে চার হাজার মেট্রিক টন। তিনি বলেন বাগামার পাট মানে ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যাপারীরা বাগমারায় ছুটে আসছেন পাট ক্রয় করতে। ঢাকা খুলনাসহ দেশের দূর দূরান্ত থেকে তারা বাগমারায় এসে ট্রাক বোঝাই করে পাট কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাগমারার মধ্যে তাহেরপেুর হাট পাটের জন্য বিখ্যাত। এছাড়া ভবানীগঞ্জ মচমইল মোহনগঞ্জ সহ বিভিন্ন হাটে কমবেশি পাট কেনা বেচা হয়। তাহেরপুর হাটে পাট কিনতে এসেছেন নাটোরের বেপারী বেলাল উদ্দিন। তিনি জানান, তারা বাপ দাদার আমল থেকে পাটের ব্যবসা করে আসছেন। তিনি নিয়মিত তাহেরপুর হাট থেকে পাট কিনে থাকেন। প্রতি হাটে তিনি ট্রাক করে পাট কিনে থাকেন। গত বছরের তুলনায় এবার পাটের দর কিছুটা বাড়তি বলে তিনি জানান। এবার পাটের দর মানভেদে ২ হাজার থেকে ২২শ টাকা পর্যন্ত। এদিকে,ভবানীগঞ্জ-তাহেরপুর রোড়ে যাওয়ার পথে রাস্তায় ট্রাক বোঝাই দেখে সেখানে নেমে পড়েন বাগমারার সংসদ সদস্য ইঞ্জি এনামুল হক। তিনি ট্রাক চালাকের সাথে কথা বলে জানতে পারেন এই পাট ভবানীগঞ্জ হাট থেকে কেনা হয়েছে। এগুলো তাহেরপুর গিয়ে বড় বড় ট্রাকে লোড দেওয়া হবে। পরে পাট গুলো ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। এভাবে বাগমারা থেকে প্রতিদিন ১০/১২ টি ট্রাক ভর্তি হয়ে পাট চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুর রহমান জানান,বর্তমানে পলিথিন যে ভাবে মহামারী আকার ধারন করছে। এবং যত্রতত্র ভাবে পলিথিনির ব্যবহার বাড়তে থাকায় পরিবেশ ক্রমশই বিষময় হয়ে ওঠছে। এ থেকে পরিত্রানের জন্য পাটের বহুমূখী ব্যবহার ছাড়া কোন বিকল্প নেই। বাগমারায় আমরা পাট চাষীদের বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করে থাকি । যাতে পাটের উৎপাদন আগামীতে আরো বৃদ্ধি করা যায়।