বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য রুহুল আমীন কর্তৃক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অরুন কান্তি রায় সিটনকে ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগে ২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর বহিষ্কার করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। ছাত্রলীগের আন্দোলন দমানোর জন্য পদবঞ্চিতদের দিয়ে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করে এবং ২০১৫ সালের ১৮ জানুয়ারি আন্দোলনকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মারপিট করে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিতাড়িত ছাত্রলীগের সদস্যরা তাদের ক্ষমতা ও আধিপত্য পুনরুদ্ধারের জন্য ক্যাম্পাসে আক্রমণের পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৫ সালের ১৬ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে নবীনবরণ অনুষ্ঠান চলাকালে তারা হামলা চালায়। এ সময় তারা ককটেল বিস্ফোরণ, পিস্তল থেকে গুলিবর্ষণ করে।
পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখান থেকে কয়েকজন আসামিকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাদের মধ্যে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাকারিয়া ও মাহমুদুল হাসান মিল্টনকে মৃত ঘোষণা করে। পরে ঘটনাস্থল থেকে ৩টি ককটেল সদৃশ বস্তু, ছোট-বড় ৮টি সামুরাই ছোরা, ৪টি লোহার রড, ১২টি বাঁশের লাঠি ও গাছের ডাল আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রক্টর অধ্যাপক ড. এটিএম শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির এসআই ফয়সাল আমীন জানান, ‘মামলাটি তদন্ত শেষে আমি আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছি।
উল্লেখ্য, মারামারি ও হত্যার ঘটনায় পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। গত বছরের মার্চে মামলাগুলো পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডিতে) স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৫ বছরেও মামলার কোনও কুলকিনারা না হওয়ায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দুই নিহত ছাত্রলীগ নেতার বাবা-মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ছেলেহারা দুই পরিবারের বাবা-মাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিকভাবে সহায়তাসহ সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন।