করোনা পরিস্থিতিতে জীবিকায় টান পড়েছে। এর মধ্যে বন্যা এসেছে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে। পাবনার চাটমোহরে ক্রমেই বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। গুমানী ও বড়াল নদীর পানি বিপদ সীমার অতিক্রম করেছে। একে একে তলিয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়ি,রাস্তা-ঘাট। ভেসে যাচ্ছে পুকুর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাতার পানি।
চলনবিল অধ্যুষিত এ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি এবার ১৯৯৮ সালের চেয়েও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে বলে আশংকা বিলপাড়ের বন্যাদূর্গত মানুষের। উপজেলায় নিম্নাঞ্চল ছাপিয়ে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে চাটমোহর পৌর শহরে। পৌর ভবনের পাশের রাস্তাসহ প্লাবিত হয়েছে পৌর ভবনের মাঠ। পানি ঢুকে পড়েছে শহরের মধ্যে। প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
করোনার এই কালবেলায় দীর্ঘমেয়াদি বন্যা মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত কোন ত্রাণ দেওয়া হয়নি। বানভাসিরা চরম সংকটে দিন পার করছে। তবে উপজেলায় প্রায় ১৯ হাজার পরিবারকে ভিজিএফ-এর চাউল দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন উপজেলার হান্ডিয়াল, ছাইকোলা ও নিমাইচড়া ইউনিয়ন পরিদর্শন করে দেখা গেছে,বন্যাদুর্গত এলাকায় পানিবন্দি মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুর বাসস্থান ও খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। অনেকে তাদের গবাদি পশু নিয়ে উঁচু সড়ক ও সেতুতে আশ্রয় নিয়েছে। কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সংকট।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার ১ হাজারের বেশী পরিবার। বিভিন্ন স্থানে সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে কয়েকশ’ মাছের ঘের ও ফসলি জমি।
পৌর সভার ২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সেলর মো. জহুরুল ইসলাম জানালেন, পৌর সভার প্রায় সকল ওয়ার্ডেই কম বেশি পানিতে প্লাবিত হয়েছে তবে আমার ২নং ওয়ার্ডের পৌরভবনসহ কিছু রাস্তা-ঘাট ও বাসা-বাড়ি বেশি প্লাবিত হয়েছে।
ছাইকোলা ইউপি চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম জানালেন, তার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে।
নিমাইচড়া ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী এএইচএম কামরুজ্জামান খোকন জানালেন, তার ইউনিয়নের ৮টি গ্রাম এখন বন্যা কবলিত। ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকল রাস্তা-ঘাটই পানির নিচে। বন্যার্তরা চরম দূর্ভোগে পড়েছে। ৫ শতাধিক পরিবার এখন পানিবন্দি।
হান্ডিয়াল ইউপি চেয়ারম্যান কে এম জাকির হোসেন জানালেন, উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়ন পুরোটাই বন্যা কবলিত। বন্যার্ত মানুষগুলো চরম দূর্ভোগে পতিত হয়েছে। দ্রুত ত্রাণ তৎপরতা চালানো দরকার।
চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান বললেন, উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন বন্যা কবলিত। ইতোমধ্যে ভিজিএফ চাল বিতরণ করা হয়েছে। চেয়ারম্যানদের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার জন্য বলা হয়েছে। শীঘ্রই সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে।