পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের চরসেনগ্রামে পুলিশের অবঃ আর আই মোঃ ওয়াজ উদ্দিন ও তার দুই ছেলে আশফাক উদ্দিন মওদুদ ও মাঈনুদ্দিন সিয়াম, ওয়াজ উদ্দিনের বড় ভাই জামাত আলী (৭০) ও আলহাজ¦ জোনাব আলী মাষ্টার (৭৫) কে লোহার হাতুরী-শাবল দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে। সোমবার সকাল দশটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। স্বজনরা আহত অবস্থায় উদ্ধার করে জামাত আলীকে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এবং জোনাব আলীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করেছেন জামাত আলী। একই দিনে ওয়াজ উদ্দিন ও তার দুই ছেলে আশফাক উদ্দিন মওদুদ ও মাঈনুদ্দিন সিয়ামের বিরুদ্ধে থানায় ঘর ভাংচুর ও অবৈধ দখলের অভিযোগ করেছেন ওয়াজ উদ্দিনের ছোট ভাই সাইফুল ইসলামের স্ত্রী তাসলিমা খাতুন।
জামাত আলীর লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উত্তর সেনগ্রাম মৌজার আর এস দাগ নং ২২২৯ এ ২৭ শতাংশ জমি পৈত্রিক সূত্রে মালিক হয়ে তিনি ও তার ভাইয়েরা অংশ মোতাবেক ভোগ দখল করে আসছেন। কয়েক দিন পূর্বে ওয়াজ উদ্দিন তার সৎ মায়ের অংশ জবর দখল করে ঘর নির্মাণ শুরু করে। জবর দখল ঠেকাতে না পেরে বাধ্য হয়ে সম্প্রতি তার সৎ মা তার অংশ ওয়াজ উদ্দিনের অপর পাঁচ ভাইয়ের নিকট বিক্রি করে দেয়। সোমবার জামাত আলী ও তার অপর তিনভাই উক্ত পৈত্রিক সম্পত্তির উপর গেলে ওয়াজ উদ্দিন সম্পত্তিতে প্রবেশ করতে নিষেধ করে। এসময় কথাকাটা কাটির এক পর্যায়ে ওয়াজ উদ্দিন ও তার দুই ছেলে জামাত আলী ও জোনাব আলীকে মারধোর করে।
ওয়াজ উদ্দিনের ছোট ভাই সাইফুল ইসলামের স্ত্রী তাসলিমা খাতুনের লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উক্ত ২২২৯ দাগের সম্পত্তিতে ঘর বাড়ি করে প্রায় ২৫ বছর যাবত বসবাস করছেন তারা। চাকুরীর সুবাদে সাইফুল ইসলাম গাজীপুরে অবস্থান করায় সম্প্রতি সাইফুল ইসলামের ঘরের বারান্দা ভেঙে দেয় ওয়াজ উদ্দিন। ঘরের দড়জার তালা ভেঙ্গে ওয়াজ উদ্দিন ও তার দুই ছেলে উক্ত ঘরে অনধিকার প্রবেশ করে বসবাস করছে। ওয়াজ উদ্দিন ঘরটি দখল করে থাকায় তাসলিমা খাতুন উক্ত ঘরে প্রবেশ করতে না পেরে বর্তমান চাটমোহর পৌর সদরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন। ঘর থেকে নেমে যেতে বললে সোমবার ওয়াজ উদ্দিন ও তার ছেলেরা তাসলিমা খাতুনকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ ও বিভিন্ন প্রকার ভয় ভীতি হুমকী প্রদর্শন করে।
কে এই ওয়াজ উদ্দিন ?
উপজেলার চরসেনগ্রামের মৃত এনাত আলী প্রাং এর চতুর্থ ছেলে ওয়াজ উদ্দিন। ছোট বেলা থেকেই এলাকায় ডানপিটে হিসেবে পরিচিত। অষ্টম শ্রেনী পাশের সনদে আশির দশকে পুলিশের কনষ্টবল পদে ভর্তি হন। প্রমোশন পেয়ে আর আই পদে উন্নীত হন। চাকরী জীবনে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে পোষ্টিং হলে স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাসপেন্ড হন। বছর তিনেক আগে অবসর গ্রহন করেন। অবসর গ্রহনের পর বাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেন। এরি মধ্যে তিনি তার ভাই সাইফুল ইসলামের অপর একটি জায়গা জোড় পূর্বক দখল করে ঘর তোলেন। সৎ মায়ের ৪০ শতাংশ জায়গা যার আনুমানিক মূল্য ২৫ লাখ টাকা, রেজিষ্ট্রি করে নিয়ে প্রায় দেড় বছরে মাত্র দেড় লাখ টাকা দেন সৎ মাকে। বাটোয়ারা না হওয়া সত্তে¡ও মায়ের জায়গা রেজিষ্ট্রি করার সময় ভাল ভাল সাইড উল্লেখ করে রেজিষ্ট্রি করে নিয়ে নামজারী করিয়ে নেন এবং একের পর এক ভাড়াটিয়া গুন্ডাদের সহায়তায় সেসব জায়গা দখল করতে থাকেন। মিস কেস করলে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উক্ত নামজারী বাতিল করেন। এলাকার আরো কয়েকটি বিরোধ পূর্ণ জমি ক্রয় করে তিনি অপরাপর মানুষের সাথে প্রায়শই বাক বিতন্ডায় লিপ্ত হন। শুধু ভাইয়েরাই নয় এলাকার প্রায় সকল মানুষ এখন তার ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করায় এলাকার মানুষের মনে এখন একটাই প্রশ্ন কোথায় তার খুটির জোড় ?