রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের এক ডিভাইস উদ্ভাবন করেছেন অস্ট্রেলিয়ার একদল বিজ্ঞানী। অত্যন্ত স্বল্প সময়ে করোনাভাইরাস শনাক্তের এই যন্ত্রকে বিশ্বে প্রথম যুগান্তকারী উদ্ভাবন বলে দাবি করেছেন তারা।
অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলেছেন, বর্তমানে কেউ আক্রান্ত হয়েছেন কিনা অথবা অতীতে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিনা; সেটি নমুনা পরীক্ষায় এই ডিভাইসে শনাক্ত হবে।
কোনও সম্প্রদায়ের মধ্যে এই ভাইরাল সংক্রমণের ব্যাপকতা জানার জন্য স্ক্রিনিং কাজে স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘ সময়ের দরকার হয়। কিন্তু শুক্রবার বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী এসিএস সেন্সরে প্রকাশিত অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞানীদের এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, ভাইরাসটির বিস্তার সীমিত করতে এই ডিভাইসের মাধ্যমে করোনা শনাক্ত এবং কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের কাজ দ্রুত নিশ্চিত করা যাবে।
অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে করোনা শনাক্তের এই যন্ত্র উদ্ভাবন করেছে বায়োপিআরআইএর বিজ্ঞানীরা। এই উদ্ভাবন কাজে অংশ নিয়েছেন কনভারজেন্ট বায়োন্যানো সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির গবেষকরাও।
গবেষকরা বলেছেন, রক্তের নমুনা থেকে মাত্র ২৫ মাইক্রোলিটার প্ল্যাসমা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্ত করতে সক্ষম যন্ত্রটি। তারা বলেছেন, বর্তমানে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তের জন্য মানুষের সোয়াব পরীক্ষা করা হয়। তবে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে কেউ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন কিনা অথবা অতীতের কোনও সময়ে সংক্রমিত হয়েছিলেন কিনা তাদের যন্ত্রটি সেটি ধরে ফেলবে।
অস্ট্রেলীয় এই গবেষকরা বলেছেন, প্রতি ঘণ্টায় এই যন্ত্রের মাধ্যমে শত শত নমুনা পরীক্ষা করা যেতে পারে। একই সঙ্গে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের কাজে সহায়তা করতে ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর কারও দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কিনা তাও শনাক্ত করবে এই যন্ত্র।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের তৈরি এই করোনা শনাক্তকরণ যন্ত্রের প্যাটেন্টের জন্য আবেদন করা হয়েছে। গবেষকরা যন্ত্রটির উৎপাদন এবং বাজারজাতকরণে অস্ট্রেলীয় সরকারের সহায়তা কামনা করেছেন।
গত বছরের শেষের দিকে চীনের উহানে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস প্রথমবারের মতো শনাক্ত হওয়ার পর এখন পর্যন্ত বিশ্বের দুই শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক কোটি ৩৯ লাখের বেশি মানুষ এবং মারা গেছেন প্রায় ৬ লাখ।
অস্ট্রেলিয়ায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১১ হাজারের বেশি মানুষ এবং প্রাণ হারিয়েছেন ১১৬ জন।