বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মাহতাবপুর এলাকায় আলোচিত এক শিশু গনধর্ষনের ঘটনার মূল আসামী মিজান (২০)সহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রধান ধর্ষক বিশ্বনাথ উপজেলার বশিরপুর গ্রামের আশিক মিয়ার ছেলে। গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জুলাই) সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) মো: লুৎফর রহমান নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি বিশেষ টিম সুনামগঞ্জের দক্ষিন সুনামগঞ্জ থানাধীন পাথারিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
জানা যায়, গত ২৫ মে রাত বার ঘটিকায় আসামী মিজান ও তার সহযোগীরা প্রেমের সম্পর্কের সুবাধে ১৪ বছরের শিশু কে ফুসলিয়ে বাড়ির পার্শ্বে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষন করে। এ ঘটনার পর আসামী পক্ষের লোকজন সহ স্থানীয় কিছু লোক ঘটনাটি আপোসে রফাদফার চেষ্টা। তবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম এর নিকট ঘটনার সংবাদ আসলে তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো: লুৎফর রহমান এর মাধ্যমে প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ভিকটিমের পক্ষ থেকে এজাহার সংগ্রহ করে মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দেন। সুষ্ট তদন্তের স্বার্থে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের নিকট ন্যস্ত করেন। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামী গ্রেফতার করার জন্য মামলা তদন্তে সার্বিক তদারকির জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) মো: লুৎফর রহমান কে দায়িত্ব দেন। পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: লুৎফর রহমান এর নেতৃত্বে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একাদিক টিম ঘটনার মূল আসামী মিজান কে গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে। এরই মধ্যে স্থানীয় কিছু লোকজনদের প্ররোচনায় ঘটনাটি আপোসের রফাদফা চলতে থাকায় কৌশলগত কারনেই আসামীকে গ্রেফতার করতে পুলিশ কে অনেক বেগ পোহাতে হয়।এক পর্যায়ে গত ৮ জুলাই বিশ্বনাথ এলাকায় প্রধান আসামী মিজানের উপস্থিতির সন্ধান পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: লুৎফর রহমান এর নেতৃত্বে অভিযান চালায়। তবে আসামীর নিকট আত্নীয়স্বজন পুলিশের ন্যায় সঙ্গত কাজে বাঁধা দিয়ে আসামীকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করে বিধায় ঘৃন্য অপরাধে অভিযুক্ত অপরাধীকে আশ্রয় দিয়ে আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গলি প্রদর্শনের দায়ে জেলা পুলিশ আশ্রয়দাতাদের কে ধর্ষনের মত ঘৃন্য অপরাধে প্ররোচনা প্রদানের জন্য তাদের গ্রেফতার করে নিয়মিত মামলা রুজু করে। পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে এক পর্যায়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ গত ১৩ জুলাই এসএমপির জালালাবাদ থানা,সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানা এবং দক্ষিন সুনামগঞ্জ থানা এলাকায় টানা চল্লিশ ঘন্টার টানা অভিযান পরিচালনা করে অবশেষে ঘটনায় জড়িত মূল আসামী মিজানসহ আরও তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম বলেন,ধর্ষনের মত সমাজের ঘৃন্য অপরাধ সামাজিক বিচার সালিশের কোন সুযোগ নেই। এ ঘটনায় আসামীর আশ্রয় দাতাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।এর মাধ্যমে আমরা সমাজে একটা বার্তা দিতে চাচ্ছি যেন ভবিষ্যতে এরকম ঘৃন্য অপরাধীদের আশ্রয় দিতে সবাই সতর্ক হয়।জেলা পুলিশের একাদিক টিম বিরামহীন প্রচেষ্টার ফলে সুনামগঞ্জের দক্ষিন সুনামগঞ্জ এলাকার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে যোগ করেন তিনি।