পাবনায় একটি ভুমিদস্যু চক্র ইউনিয়ন ভুমি অফিসের যোগসাজশে জাল জালিয়াতি মাধ্যমে রেলওয়ের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমির ক্ষতিপুরনের কোটি কোটি টাকা আতœসাত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জালিয়াতির মাধ্যমে এলএ অফিস থেকে চেক তুলে নিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি জানাজানি হলে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি)
রোখসানা মিতা এ সংক্রান্ত ৪৩ নামজারী (খারিজ) বাতিল করে দেন। ফলে উত্তোলনকৃত এ সব টাকা এখন সরকারী কোষাগারে ফেরত দিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, পাবনা সদর উপজেলার কবিরপুর এবং লস্করপুর মৌজায় রেলওয়ের
জন্য বিভিন্ন ব্যাক্তির ৯৬ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে পাবনা শহরের পৈলানপুর এলাকার জনৈক নাছির উদ্দিনের স্ত্রী মোছা মনোয়ারা বেগমের
উত্তরাধীকার সুত্রে পাওয়া পাঁচ বিঘা বা দেড়‘শ শতাংশ জমি রয়েছে। এই জমির ক্ষতিপুরণের টাকা মনোয়ারা বেগমের নাম স্বাক্ষর জাল করে দোগাছি ইউনিয়নের তৎকালীন সহকারী ভুমি কর্মকর্তার যোগসাজশে জনৈক মুক্তি এবং সাইফুল খা ভুয়া বাটোয়ারা দলিল দেখিয়ে খাজনা খারিজ করে চেক তুলে নেন। পরবর্তিতে মনোয়ারা বেগম বিষয়টি নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমির কাছে আবেদন
করলে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) রোখসানা মিতা এ সংক্রান্ত ৪৩ নামজারী (খারিজ) বাতিল করে দেন। বিষয়টি শহরের সর্বত্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
পৈলানপুর এলাকার মোছা মনোয়ারা বেগম জানান, পাবনা সদর উপজেলার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের পিএস ৪১১/০৬ মোর্কদ্দমায় ছোলে এবং এক তরফা ডিগ্রিসুত্রে জনৈক আব্দুল লতিফসহ ২৫ জন নিজ নিজ নামে নামজারী (খারিজ) করে নেন। এই মোর্কদ্দমায় ২৬ নং বিবাদী ছিলেন মনোয়ারা বেগম। কিন্তু মনোয়ারা বেগমকে না জানিয়ে এবং ছোলেনামা গোপন করে বাদী পক্ষ একতরফা
ডিগ্রি নেন। তিনি ঘুনাক্ষরেও কোন প্রকার ছোলে নামায় স ইবা স্বাক্ষর করেননি। পরবর্তিতে মনোয়ারা বেগম ভুয়া ছোলের একতরফা ডিগ্রি বাতিল
চেয়ে এবং ঐ ডিগ্রির বলে কেউ যেন নাম খারিজ করতে না পারে সে জন্য পাবনা সদর উপজেলা সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন (মামলা নং ৮৯/২০১০)। বিজ্ঞ আদালত
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) কেউ যাতে নাম খারিজ করতে না পারে সে জন্য
ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আদেশ দেন। পিএস ৮৯/১০ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি গত ০৪-১০-
২০১০ তারিখে ১৯৯৫ স্মারকের পত্রের মাধ্যমে দোগাছির তহশীলদারকে অবহিত করা হয়।
এর পরেও ঐ সময়ে পর্যাক্রমে কর্মরত তহশীলদার মহিউল আলম, মোস্তফা শামীমসহ
অন্যরা যোগসাজশ করে ভুমিদস্যু চক্র মুক্তি খা এবং সাইফুল খা‘র সহযোগিতায় সকল জমির নামজারী করে।
মোছা মনোয়ারা বেগমের ছেলে মো. রতন জানান, তার নানীর সম্পত্তি থেকে থেকে তা মা ৫ বিঘা জমি পায়। সে জমি রেলের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু তার
মাকে না জানিয়ে এবং তার মায়ের স্বাক্ষর জাল করে মুক্তি ও সাইফুল খা দোগাছি তহশীল অফিসের যোগসাজশে কয়েক কোটি টাকা তুলে নেয়। বিষয়টি জানার তার মা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমির কাছে ন্যয় বিচারের আবেদন করলে ঐ সব জমির খারিজ বাতিল করা হয়।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) রোখসানা মিতা জানান, এ সংক্রান্ত ৪৩ নামজারীর (খারিজ) আদেশ বাতিল করা হয়েছে। ফলে এ সব জমি দেখিয়ে
কেউ টাকা তুললে উত্তোলনকৃত এ সব টাকা সরকারী কোষাগারে ফেরত দিতে হবে।