প্রথম দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই দু’দিনের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের
পানিতে আবারও নেত্রকোনার কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নসহ উপজেলার নাজিরপুর,
পোগলা, বড়খাপন, খারনৈ, রংছাতি, লেংগুড়া ও কৈলাটী ইউনিয়নের দুইশতাধিত
গ্রামের অন্তত পনের হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থের স্বীকার হয়েছেন নি¤œ আয়ের লোকজন। এ বন্যায় উপজেলারআটটি ইউনিয়নের আউশ বীজতলা, কাঁচা ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, পুকুর পানিতে তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
শনিবার সকালে সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দু’দিনের টানা ভারী বর্ষণে
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের খাল-বিল, ছড়া ও জলাশয়সমূহ পানিতে ভরে উঠেছে। ফলে মাঠ-ঘাট ও গ্রাম্য সড়ক পানিতে ডুবে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আর ছোট বড় প্রায় দুই হাজার পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যচাষীরা
পুকুরের মাছ বেরিয়ে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, কলমাকান্দার প্রধান উব্দাখালী নদীর পানি
শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। গত দু’দিনে শনিবার সকাল পর্যন্ত উপজেলায় ৮২ মিলিলিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে বিকেলের মধ্যে বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অনিক রহমান জানান, গত বন্যায় ১ হাজার ৬০৪টি
পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ফের বন্যায় আরো প্রায় ২ হাজার মৎস্য চাষী ক্ষতির
সম্মুখীন হতে পারে বলে তিনি জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারুক আহমেদ জানান, উপজেলার আটটি
ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ফের পানিতে তলিয়ে আমনের
প্রায় ৩শ’ একর বীজতলা ও ৫শ’১০ হেক্টর আউশ ধানের জমির ফসল ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার
আশঙ্কা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা ও উপজেলা পরিষদের
চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক তালুকদার বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন শেষে স্থানীয়
সাংবাদিকদের জানান, বনার্তদের মধ্যে চাউল বিতরণ অব্যাহত আছে। তাছাড়া এ
দুর্যোগ মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের সব ধরণের প্রস্তুতি রয়েছে বলেও তাঁরা
জানান।