বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও ফুটপাথ না থাকায় জন দুর্ভোগ

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ পৌর বাজারে উপযুক্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও ফুটপাথ না থাকায় পথচারীদের পেহাতে হয় মারাত্বক বিড়ম্বনা। এখানে প্রতিনিয়ত ঘটে দূর্ঘটনা এবং যানবাহন চলাচলে কাঁদাপানি ছিটকে পথচারীদের জামাকাপড় নষ্ট হচ্ছে। এসব অবর্ননীয় দূর্ভোগ ও কষ্ট পেরিয়ে চলাচলকারী পথচারীরা তাদের কষ্টের কথা কোথাও জানাতে পারছেনা। পৌর মেয়রের একঘেয়োমীর কারণে দূভোর্গের শিকার লোকজন তাদের অভিযোগের বিষয়ে পৌরসভায় যেতেও লজ্জাবোধ করে। পৌরসভা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নানান ঝোড়ঝামেলা পেরিয়ে সম্প্রতি ভবানীগঞ্জ বাজারের এক কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে গত সপ্তাহ খানেক আগে। স্থানীয়রা জানান, সারা বছর পৌরসভার লোকজন নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে ভরা বর্ষা মৌসুমে এসে তারা শুরু করেছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। এই রাস্তার কাজের মান নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। এর আগে এই পৌর সভায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মাণ করা হলেও এখন সেগুলো আর কোন কাজে আসছে না। বছর না পেরোতেই ড্রেনগুলো এখন অনেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। এগুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। ভবানীগঞ্জ হিন্দুপাড়া ও মাষ্টারপাড়ার ড্রেনগুলো দিয়ে আর পানি নামছে না। বিএনপি’র মেয়র আব্দুর রাজ্জাকের আমলে ড্রেনগুলো নির্মাণের পর আর কোন সংস্কার না হওয়ায় সেগুলো আর সচল নেই। তার আগে ভবানীগঞ্জ কলেজ রোড় থেকে গোডাউন মোড় পর্যন্ত রাস্তাটি আঠার লক্ষ টাকা ব্যয়ে সংস্থার করা হলেও মাস না পেরোতেই রাস্তার পিচ ওঠে একাকার হয়ে যায়। এখন ওই রাস্তা খানাখন্দকে ভরা। পৌরসভার কাউন্সিলর হাচের আলী রস্তাটির ঠিকাদারী নেওয়ায় স্থানীয়রা সেটাকে এখনও হাচেন রোড় বলেও চেনেন। বর্তমানে ওই রাস্তাটিতে কোন রকমে জোড়াতালি দিয়ে চলাচলের উপযোগি করা হয়েছে। একইভাবে ভবানীগঞ্জ বাজারের রাস্তা সংস্কার কাজের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ ভবানীগঞ্জ বাজারের ড্রেন, রাস্তা কোনটারই কাজের মান ঠিকভাবে করা হয় না। এখানে শুধু কাজের নামে টাকারই অপচয় আর লুটপাট করা হয়। আর এর পরিনতিতে দূর্ভোগ পেহাই পৌরবাসী। সম্প্রতি ভবানীগঞ্জ কলেজ মোড় থেকে জিরো পয়েন্ট হয়ে তরকারি হাটি ও ভাঙ্গা ব্রীজ পর্যন্ত যে এক কিলোমিটার রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে সেখানেই নয়ছয়ভাবে কাজ করা হচ্ছে। এককিলোমিটার দৈর্ঘের ও চৌদ্দ ফিট প্রস্থের এই রাস্তাটির জন্য সরকারি বরাদ্দ ৪৬ লক্ষ টাকা । স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদারের মতে এই পরিমান বাজেট দিয়ে রাস্তাটি সংস্কার করা হলে এখানে যথেষ্ট মানসম্পন্ন রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব। বাজারের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দরা জানান, এখানে পৌরসভা প্রতিষ্ঠার দুই দশক পার হতে চলেছে। আগের তুলনায় এখন যানবাহন ও লোকসংখ্যা দশগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই তুলনায় রাস্তাঘাট একেবারে প্রশস্থ হয়নি। যে কারণে এখানে যানযট একটি নিত্যদিনের সমস্যা। এছাড়া পৌরসভার ব্র্যাক মোড়সহ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় ও যানবাহন চালকদের হয়রানী বিষয় নিত্য দিনের ঘটনা হয়ে দাড়িয়েছে। তবে কিছুটা ভিন্নমত পোষন করে ভবানীগঞ্জ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাচেন আলী বলেন, পৌরসভার রাস্তা সহ চলমান যে উন্নয়ন কাজ হচ্ছে তা খুবই সন্তোষজনক। এবিষয়ে যোগাযোগ করা হলে পৌরসভার সহকারি প্রকৌশলী লিটন মিয়া জানান, রাস্তাটি প্রথমে চৌদ্দ ফিট প্রশস্থ করার হিসাব ধরা হয়েছিল পরে তা বাড়িয়ে বাইশ ফিট করা হয়েছে। বর্তমান যানবাহন ও লোকসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় এই পরিমান রাস্তা প্রশস্থ যথেষ্ট নয় বলে স্বীকার করে তিনি জানান, আমরা পর্যায়ক্রমে আগামী অর্থ বছরের মধ্যেই রাস্তার অবশিষ্ট প্রশস্থকরনের কাজ শুরু করব। সেই সাথে ড্রেনেজ ব্যবস্থারও উন্নয়ন ঘটানো হবে। পৌর মেয়র আব্দুল মালেক মন্ডল প্রায় একই অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, দাপ্তরিক কিছু কাজ ও বরাদ্দ অনুমোদন পেতে বিলম্বের কারণে বর্ষা মৌসুমে কাজ শুরু করতে হল। তারপরও আমরা কাজের গুনগত মান ঠিক রাখার ব্যাপারে সর্বদা মনিটরিং করছি। কোথাও কোন সমস্যা হলে সাথে সাথে তার সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে।