বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বগুড়ার নন্দীগ্রামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোত্তারিন জাহিদ সরকারের উপর প্রকাশ্যে দিবালোকে হামলা এবং পরবর্তীতে পাল্টাপাল্টি থানায় অভিযোগ এর ঘটনায় উপজেলায় সাধারণ মানুষের মাঝে নানারকম প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে যা অতিদ্রুত সমাধান না হলে পরিস্থিতি ঘোলাটে হবে বলেও ধারণা স্থানীয় অনেকের।
থানায় দায়ের হওয়া এজাহার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হামলার শিকার মোত্তারিন জাহিদ সরকার নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আওয়ামী পরিবারের ত্যাগী নেতা মৃত: জাহিদুর রহমান সরকারের ছেলে। উপজেলার
কামুল্যা গ্রামস্থ সরকারী পাঁচ পুকুর নামক পুকুর এবং মুরাদপুর গোরালী পুকুর লিজ নেওয়া সরকারী পুকুরে মাছ চাষ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলা বিরোধে গত ২৯জুন দুপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদা দাবি করে মোত্তারিনের উপর হামলা করা হয় নন্দীগ্রাম বাজার এলাকায়। এ ঘটনায় মোত্তারিন জাহিদ বগুড়া শজিমেকে চিকিৎসা পরবর্তী ঐ দিনই নন্দীগ্রাম থানায় হাজির হয়ে ১০ জনকে এজাহারভুক্ত
এবং ৮/১০ জনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে বে-আইনী জনতায় দলবদ্ধ হয়ে পথরোধপূর্বক হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট করে জখম করা, চাঁদা দাবি, চুরি, ভয়ভীতি এভং হুকুম প্রদানের অপরাধ দেখিয়ে মামলা দায়ের করেন।
একই দিন আবার উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক মোত্তারিনসহ মোট ৯ জনকে এজাহারভুক্ত এবং ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা করে উপজেলার কামুল্যা মৌজায় ২ একর জমির বন্টন এবং রাস্তা সংলগ্ন ১৬ শতক জমি জোরপূর্বক দখলের অভিযোগ এনে মোত্তারিনের দায়ের করা এজাহারের অধিকাংশই অনুরুপ সকল ধারায় অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন সাজ্জাদ হোসেন নামের এক
ব্যক্তি। একই দিনে পাল্টাপাল্টি থানায় অভিযোগে দায়ের হয় ২ টি মামলা কিন্তু ত্যাগী আওয়ামী পরিবারের সন্তান মোত্তারিনের হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও বিচারের দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যে বিবৃতি দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতৃবৃন্দসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের একঝাঁক নেতৃবৃন্দ। কে ভাল আর কে খারাপ এই দ্বিধাদ্বন্দ্বে বর্তমানে ঘোলাটে পরিস্থিতি এই এলাকায়
কারণ স্থানীয় রাজনৈতিক একাধিক নেতৃবৃন্দ একে অপরকে দোষ দিয়েছেন একাধিক ঘটনা প্রসঙ্গে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীম শেখ সহ নাম-প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক রাজনৈতিক নেতবৃন্দরা আক্ষেপ করে জানান যে, নন্দীগ্রামে বর্তমানে নব্য-যোগদানকৃত এবং বিভিন্ন বড় বড় রাজনৈতিক ছায়াতলে থাকা উঠতি নেতাদের ভীড়ে পুরাতন নেতারা প্রায় কোণঠাসা হয়ে দিনে দিনে। মোত্তারিনের উপর হামলায় ত্যাগী নেতাদের মাঝে এক ক্ষোভের
সৃষ্টি হয়েছে কারণ সে তাদের সাবেক সভাপতির ছেলে এবং আওয়ামী লীগের একজন একনিষ্ঠ কর্মী। হাটের ইজারা, পুকুর নিয়ে বিরোধ, সংগঠনের নামে
বিভিন্ন চাঁদা উত্তোলনসহ ক্ষমতা ও আধিপত্য বিস্তারের মহোৎসব চলছে এইখানে যা অতিদ্রুত সমাধান হওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তারা। মুঠোফোনে হামলার শিকার মোত্তারিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার উপর হামলাসহ
সার্বিক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপসহ স্থানীয় প্রশাসনের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছে।
এদিকে নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ শওকত কবিরের সাথে কথা বললে তিনি জানান, নন্দীগ্রামে একই রাজনৈতিক মতাদর্শের দুটি গ্রুপের মাঝে এই
দ্বন্দ্বে ইতিমধ্যেই থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামীদের গ্রেফতারও করা হয়েছিল বর্তমানে তারা জামিনে রয়েছেন। মামলা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে মর্মে জানান এই কর্মকর্তা।