দীর্ঘ ৩ মাস ৪ দিন পর আগামী ১লা জুলাই থেকে আবারও উৎপাদনে যাচ্ছে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি। করোনা মহামারীর সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক গত ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ হয়ে যায় কয়লা খনির উৎপাদন।
জানা যায়, করোনার সংক্রমণ রোধে অঘোষিত লকডাউনের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী শুরু হয় সাধারণ ছুটি। চার দফায় এ ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধির পর গত ৩১ মে তা শেষ হয়। এর আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে চীনা শ্রমিকদের নিয়ে কয়লা উত্তোলনের পাশাপাশি সকল কার্যক্রম শুরু করেন খনি কর্তৃপক্ষ।
করোনাকালীন সময়ে খনির অভ্যন্তরে শ্রমিকদের কাজে যোগদান করতে না দিয়ে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠান চীনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সিএমসি এক্সএমসি জেএসএমই। এতে কর্মহীন হয়ে পড়ে খনির ১১৪৭ জন শ্রমিক। ইতিমধ্যে এপ্রিল ও মে এ দুই মাস অতিবাহিত হয়েছে। জুন মাসও শেষের পথে। কিন্তু শ্রমিকদের সাধারণ ছুটিকালে শতকরা ৬৫ ভাগ বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও সরকারের প্রজ্ঞাপন কার্যকর করেনি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে শ্রমিকরা। অবশেষে শ্রমিকদের জন্য আশার বানী জানিয়েছেন বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কামরুজ্জামান খান।
এমডি আরও জানান, কয়লাখনিতে কর্মরত ১হাজার ১৪৭জন বাংলাদেশী শ্রমিক কাজ করে। এসব শ্রমিক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত। চুক্তিতে আছে “নো ওয়ার্ক নো পে”। তবে শ্রমিকেরা যেহেতু আমাদের দেশের, আমাদের সন্তান তাই আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার তাগিদ দিয়ে কয়লা উত্তোলনে ও বাংলাদেশী শ্রমিকদের কাজে যোগদানে রাজি করিয়েছি। তবে তারা করোনাকালীন সময়ের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করতে রাজি হয়েছে। বাকি অর্ধেক বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী কর্তৃপক্ষ পরিশোধ করবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত যেসব শ্রমিক খনির অভ্যন্তরে থাকতে রাজি হবেন কেবলমাত্র তারাই আগামী ৩/৪ দিনের মধ্যে , সর্বোাচ্চ আগামী ১লা জুলাই থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে কাজে যোগদান করতে পারবেন। আর করোনা পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হলে পুনরায় সব শ্রমিককে খনিতে যোগদানের সুযোগ করে দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।