ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সাংবাদিক এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী মারা গেছেন। শনিবার (২০’জুন) সকালে মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (কোভিড-১৯) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম-মুক্তিযুদ্ধ’৭১ পাবনা জেলা শাখা’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন সন্টু, সহ-সভাপতি বীর মুক্তযোদ্ধা এ কে এম কামরুল ইসলাম ফুটু, সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোমিনুর রহমান বরুণ, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিরুল ইসলাম রাঙ্গা, দপ্তর সম্পাদক সাংবাদিক শফিক কামাল ও আইন বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. দেওয়ান মজনুল হকসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এক বিবৃতিতে তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন।সেই সাথে তাঁর বিদেহী আত্মা’র মাগফিরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।
কামাল লোহানী ১৯৩৪ খ্রি. ২৬ জুন তৎকালীন পাবনা ও বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার সনতলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তাঁর পিতার নাম ছিল আবু ইউসুফ মোহাম্মদ মুসা খান লোহানী এবং মাতার নাম রোকেয়া খান লোহানী। কলকাতার শিশু বিদ্যাপীঠে তাঁর প্রথম পড়াশুনা জীবন শুরু হয়। ১৯৪৭ খ্রি. ভারত ভাগের পর তিনি ১৯৪৮ খ্রি. পূর্ববাংলা পাবনায় চলে আসেন। ভর্তি হন পাবনা’র জিলা স্কুলে। ১৯৫২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হন।পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে পড়ার সময় ভাষা আন্দোলনে জড়িত হন। এই কলেজ থেকেই তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন।
কামাল লোহানী কর্মজীবনে দৈনিক মিল্লাত পত্রিকা দিয়ে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। এরপর আজাদ, সংবাদ, পূর্বদেশ, দৈনিক বার্তায় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন।তিনি সাংবাদিক ইউনিয়নে দুই দফা যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতেও দুইবার মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ছায়ানটের সম্পাদক ছিলেন পাঁচ বছর। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটেরও উপদেষ্টা ছিলেন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী। মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের বার্তা সম্পাদক ছিলেন।কামাল লোহানী ২০১৫ সালে একুশে পদক লাভ করেন।