বগুড়ায় সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে
অপরাধীদের দমন করতে না পারলে সেচ্ছায় বগুড়া থেকে চলে যাওয়ার হুশিয়ারীর মাধ্যমে
অপরাধীদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম
(বার)। তিনি বলেছেন, বগুড়ায় কোন চাঁদাবাজদের ঠাঁই হবেনা। করোনাকালের সুযোগ
নিয়ে কেউ যদি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘœ করতে চায় সে যত ক্ষমতাশালীই হোক না
কেন তা দমনে জেলা পুলিশ পরিবার সদা প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩য় পর্যায়ে শহরের নিশিন্ধারা ফকিরউদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজ হলরুমে
বগুড়া সদর থানার আয়োজনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং
এলাকাবাসীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিয়ম সভায় প্রধান
অতিথির বক্তব্যে তিনি উপোরোক্ত কথাগুলি বলেন। মতবিনিময় সভায় জেলা পুলিশের এই
কর্ণধার আরো বলেন, গত কয়েকদিনে বগুড়ায় আকষ্মিকভাবে কিছু হত্যাকান্ডের ঘটনা
ঘটেছে যেগুলোর ইতিমধ্যেই নিবিড় তদন্ত চলছে এবং বেশকিছু আসামীকেও গ্রেফতার
করা হয়েছে। এসব খুনের আড়ালে কে বা কাহারা রয়েছে তাদের মুখোশও উন্মোচন করা
হবে মর্মে তিনি সকল অপরাধী মানসিকতা নিয়ে থাকা ব্যক্তিবর্গকে কঠোর হুশিয়ারী
দেন। সেই সাথে চাঁদাবাজদের আইনের আওতায় আনতে এবং জনগণের সুবিধার্থে
এখন থেকে জেলায় সকল স্থাপনা নির্মাণ কাজ জেলা পুলিশের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে
হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। পুলিশ সুপার বলেন, বাড়িওয়ালা যেখান থেকে ইচ্ছা বালি,
সিমেন্ট, রড সহ যেকোন নির্মাণসামগ্রী কিনবে তাকে কেউ প্রভাবিত করলে বা
ক্ষমতা দেখালে তাকে সমূলে দমন করতে জেলা পুলিশের সদস্যরা প্রস্তুত। সেই লক্ষ্যে
ইতিমধ্যেই জেলায় বিভিন্ন নির্মাণাধীণ ভবনের সামনে জেলা পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত
কর্মকর্তাদের মোবাইল নম্বরসহ পর্যবেক্ষণের প্যানা টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে। বগুড়া সদর
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস.এম বদিউজ্জামান এর সভাপতিত্বে এবং উপশহর পুলিশ
ফাঁড়ির এস.আই আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় সভায় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ
সুপার (সদর সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তী, সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান
ডালিয়া নাসরিন রিক্তা, বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ আমিনুল ইসলাম, ১ নং ওয়ার্ড
কাউন্সিলর সার্জিল আহম্মেদ টিপু এবং ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।
এসময় জেলা পুলিশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া সদর থানার ওসি (তদন্ত) রেজাউল করিম
রেজা, উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নান্নু খান, গণমাধ্যমকর্মী ও যুব
সংগঠক সঞ্জু রায় প্রমুখ। সভায় এলাকাবাসীর পক্ষে জেলা পুলিশের কাছে উপশহর,
নিশিন্ধারা ও চারামাথাসহ এলাকাগুলোর বর্তমান কিছু উল্লেখযোগ্য সমস্যা যেমন
বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ, অবৈধ বালু ব্যবসা, টার্মিনাল কেন্দ্রিক মাদকের বিস্তার,
ঔষধের দোকানে বিভিন্ন নেশাজাতীয় ঔষধের বিক্রি বন্ধ সহ এখনো যারা গোপনে মাদক
ব্যবসা করছে তাদের চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে সঠিকভাবে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার
লক্ষ্যে সহযোগিতা কামনা করা হয়। যার প্রেক্ষিতে জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা
নিজেই সকল সমস্যা কঠোর হস্তে দমনের প্রতিশ্রুতি দেন। সেই লক্ষ্যে তিনি গোপনে
সরাসরি তাকে যেকোন তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহব্বান জানান তারপরেও দ্রুততম
সময়ে বগুড়ার বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযোগ বক্স স্থাপনের ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান জেলা
পুলিশের এই কর্ণধার।