সম্মানিত বার কাউন্সিলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ,
আসসালামু আলাইকুম।
আশা করছি এই করোনা পরিস্থিতিতে ভালো থাকার কথা নয়, তার পরেও শিক্ষানবীশ আইনজীবী হিসাবে অধিক সংখ্যাক শিক্ষানবীশদের মনের কথা তুলে ধরছি।
ইতিমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি গত ১৬ জুন ২০২০ ইংরেজী বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা মিটিং করেছেন।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নেতৃবৃন্দরা কোন একটা মিটিং আয়োজন করলে সব চাইতে বেশি খুশি হয় শিক্ষানবীশ আইনজীবীগণ। কারণ তারা ভাবতে শুরু করে এবার নিশ্চয় একটা সুসংবাদ আসতে পারে আমাদের জন্য, যদি কোন সুসংবাদ না হয়ে দুঃসংবাদ হয় কষ্ট ভরা মন নিয়ে পরের মিটিংয়ের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করে সুসংবাদের আশায়,এভাবে দিনের পর দিন কাটছে শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের কিন্তু গত ১৬ জুন ২০২০ ইং রোজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দদের মিটিংয়ের সংবাদ পেয়েও প্রতিবারের ন্যায় অনেক বেশি খুশি হয়েছে শিক্ষানবীশ আইনজীবীগণ যাতে এই করোনা পরিস্থিতিতে জননেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে প্রত্যেক বিষয়ে শিথিল করে অনুগ্রহ দেখিয়েছেন আপনারাও শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের বিষয়ে অনুগ্রহ স্বরূপ ভাল সিদ্ধান্ত নিবেন। কিন্তু দূরভাগ্যের বিষয় সকল শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের সব আশা/স্বপ্ন ভেঙ্গে চুড়মার করে দিয়েছেন আপনারা।
শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের চলামান পরিস্থিতি নিয়ে মিটিংয়ে একবারও বাংলাদেশ বার কউন্সিল নেতৃবৃন্দ/ আমাদের অভিভাবক আমাদের নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করতে ইচ্ছে পোষণ করেনি। আমরা আপনাদের অভিভাবক হিসেবে মনে করি সব সময়, কিন্তু আপনারা অভিভাবক হিসেবে আমাদের উপর আপনাদের দায়িত্ববোধ দেখাতে পারেন না।
এই করোনা পরিস্থতিতে শিক্ষানবীশ আইনজীবীগন বিভিন্ন যুক্তি নিয়ে বিভিন্ন সময় লেখা লেখি করেছেন, যেমন- প্রণোদনা চেয়েছে, এমসিকিউ উত্তীর্ণ ভাইদের অচিরে পরীক্ষা না হলে গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে সনদ প্রদানের ব্যবস্থা,২০২০ সালে এমসিকিউ৷ পরীক্ষায় অংশ গ্রহণকারীদের গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে সনদ প্রদানের ব্যবস্থা, সকল শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের স্বাধীন পেশা হিসাবে গেজেটের মাধ্যমে সনদ প্রদান করা সহ আরো আনেক কিছু, উল্লেখিত বিষয়ে প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলা জজকোর্ট বারে, জেলা প্রশাসকের বরাবর, প্রধান মন্ত্রীর বরাবর খোলা চিঠি, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বরাবর খোলা চিঠি সহ ডাকে প্রেরণ করেছেন, আপনারা এই বিষয়ে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন কিন্তু আপনারা এই বিষয় নিয়ে আলোচনাও করেন নাই।
এখন আমাদের মনে হয় আপনারা আমাদের জন্য কি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
আমাদের মনে হয় না আপনারা বিন্দু পরিমান আমাদের নিয়ে চিন্তা করেন, যদি সত্যি চিন্তা করতেন তা হলে ৩/৪ বছর পর পর পরীক্ষা না নিয়ে প্রতি বছর কমপক্ষে ১টি করে ব্যাচ পরীক্ষা সম্পন্ন করতেন ।
এই পরিস্থতিতে প্রত্যেক শ্রেণীর মানুষ প্রণোদনা পেয়েছে শুধু শিক্ষানবীশ আইনজীবীরা কোন প্রণোদনা পায়নি। যদি সত্যি আপনারা আমাদের নিয়ে চিন্তা করতেন তা হলে শিক্ষানবীশদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিতেন।
আমরা প্রায় ৭০,০০০ হাজার ( সত্তুর) শিক্ষানবীশ আইনজীবী, আপনাদের অধীনে শরীরে শিক্ষানবীশ আইনজীবীর পোশাক লাগিয়ে হাহাকার করছি তৃষ্ণার্ত মানুষের মত, যদি সত্যি চিন্তা করতেন আমাদের কথা তা হলে আমাদের এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতেন।
আপনারা দয়া করে আমাদের কথা গুলো একবার চিন্তা করুণ।
১। কিভাবে কাটচ্ছে শিক্ষানবিশ আইনজীবীগনের জীবন ?
২।কিভাবে কাটবে শিক্ষানবিশ আইনজীবীগনের ভবিষ্যৎ ?
৩। আইনে ডিগ্রি নিয়ে অ্যাডভোকেট ব্যতিত শিক্ষানবিশ আইনজীবীগন কি করবে?
৪। আইনে ডিগ্রি লাভের পর শিক্ষানবিশ আইনজীবীগণ পরিবারকে কি জবাব দিবে ?
৫। শিক্ষানবিশ আইনজীবীগণরা আইনে ডিগ্রি নেওয়ার পর পরিবারকে কিভাবে আর্থিক সার্পোট দিবে ?
৬। শিক্ষানবিশ আইনজীবীগনের জীবনের কষ্টের গল্পগুলো কি আপনাদের কষ্ট লাগেনা ?
আমরা শিক্ষানবিশ আইনজীবী এই প্রশ্নের উত্তর পাই না, আমারা কি ভেবে নেব আইনে ডিগ্রী নিয়ে অভিশপ্ত জীবন গড়েছি ?
আগামীতেও আমাদের পরের প্রজন্ম আইন বিষয় নিয়ে ডিগ্রি গ্রহণ করতে অনীহা প্রকাশ করবে।
আপনারা আমাদের সুযোগ করে দিতে না পারলে আইন বিষয়ে ডিগ্রি চালু রেখে আমাদের মত নতুন প্রজন্মের জীবন বিপন্নের পথে ফেলবেন না।
পরিশেষে আমরা মান অভিমান যাই করিনা কেন আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল,আমাদের অভিভাবক আপনারা, আপনারা আমাদের উজ্জল ভবিষ্যৎ এবং উপরোক্ত সংকটময় মূহুর্ত থেকে কিভাবে আমরা পরিত্রাণ পাব সেদিকে দৃষ্টিপাত করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।
শিক্ষানবীশ আইনজীবীদের পক্ষেঃ
মোঃ আলমগীর হোসেন,
সভাপতি, বাংলাদেশ শিক্ষানবিশ আইনজীবী পরিষদ ( BSAP) কেন্দ্রীয় কমিটি ও সাবেক সভাপতি, বঙ্গবন্ধু ‘ল’ কলেজ।