যশোরে নতুন করে দশজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় খুলনা থেকে যশোরের সাতজনের নমুনা পজেটিভ আসে। এ নিয়ে জেলায় মোট ১৭১ জন করোনায় আক্রান্ত হলেন।
আক্রান্তদের মধ্যে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও তার ষোড়শী কন্যাও রয়েছেন। এর আগের দিন তত্ত্বাবধায়কের ডাক্তার স্ত্রীও আক্রান্ত বলে শনাক্ত হন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টারে বুধবার দক্ষিণ-পশ্চিমের পাঁচ জেলার মোট ১৫১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর
মধ্যে ১৩টি নমুনা পজেটিভ রেজাল্ট দিয়েছে।
যবিপ্রবি জেনোম সেন্টারের পরীক্ষণ দলের সদস্য ও এনএফটি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. শিরিন নিগার জানান, এদিন যশোরের ৯২টি নমুনা পরীক্ষা
করে দশটির ফল পজেটিভ পাওয়া যায়।
স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, পজেটিভ হওয়া দশটি নমুনাই নতুন। এদিন তিনটি ফলোআপ নমুনা ছিল। এগুলোর ফল নেগেটিভ আসে। তবে এর মধ্যে একজনের নমুনা খুলনা জেলার ফুলতলা থেকে সংগ্রহ করা হয়। ফলে তাকে খুলনার রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হচ্ছে।
এছাড়া এদিন নড়াইলের ১২টি নমুনা পরীক্ষা করে দুটির ফল পজেটিভ পাওয়া যায়।
মাগুরার ৩৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে একজনের পজেটিভ ফল মিলেছে। আর সাতক্ষীরার পাঁচ ও বাগেরহাটের আটটি নমুনা পরীক্ষা করে সবগুলোর ফলাফল নেগেটিভ এসেছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আবু শাহীন সকালে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, যবিপ্রবির ফলাফল পাওয়া গেছে। যশোরের আক্রান্ত দশজনের বাড়ি কোন কোন এলাকায় এবং তারা বর্তমানে কোথায় অবস্থান করছেন তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে, দুপুরে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, যশোরের নতুন দশ করোনা রোগীর মধ্যে জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপকুমার রায়ও রয়েছেন।
আরো আছেন তার ১৬ বছর বয়সী মেয়ে দেবযান রায় ও ব্যক্তিগত গাড়ির চালক রানাপ্রসাদ সানি (৪৮)।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ নিশ্চিত করেছেন যে, জেলার এই প্রধান স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্তা সপরিবারে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগের দিন তত্ত্বাবধায়কের স্ত্রী ডা. অঞ্জনা রায়ের ফলও পজেটিভ আসে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ তার পরিবারের সদস্যরা কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। তত্ত্বাবধায়কের স্ত্রী ডা. অঞ্জনা যশোর মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও বিশিষ্ট অ্যানেসথেসিস্ট। তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত।
সিরাজগঞ্জের একটি ক্যানসার হাসপাতালে রেডিও থেরাপি দিয়ে গত রোববার ডা. অঞ্জনা যশোরে ফেরেন।
আজ যবিপ্রবির ফলাফলে আরো যেসব ব্যক্তি নতুন করে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে মণিরামপুরের দুইজন, অভয়নগরের চারজন এবং শার্শার একজন রয়েছেন।
স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, মণিরামপুরে আক্রান্ত দুই পুরুষের বয়স ৩৫ ও ৩৮, অভয়নগরের চারজনের মধ্যে এক নারীর বয়স ৪১। অন্য তিনজন পুরুষ; তাদের বয়স ৩৮, ৫৫ ও ৫২। শার্শায় শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির বয়স ৫০।