চলনবিলে আগাম বন্যায় দিশেহারা ভুট্টা চাষীরা

নাসিম উদ্দীন নাসিম
নাটোরের সিংড়ার কৃষি প্রধান চলনবিল অঞ্চলে কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর নদী পথে উজানের পানি এসে আকষ্মিক বন্যার কবলে ভুট্টা নিয়ে মহা
বিপাকে পড়েছে কৃষক। নৌকা নিয়ে পানির নীচ থেকে ভুট্টা কেটে ঘরে তুলতে নানা দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। দ্বিগুন শ্রমিক খরচ দিয়েও
অর্ধেকের বেশি জমি থেকে ভুট্টা আনতে পারছেন না। ফলে প্রতি বিঘা জমিতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের।
সরেজমিনে উপজেলার ডাহিয়া, সাঁতপুকুরিয়া, বেড়াবাড়ি ও হিজলী গ্রামের ভুট্টা চাষিদের বাড়ির পাশের খোলায় গিয়ে দেখা যায় শ্রমিকরা
ভুট্টা মাড়াই ও শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নৌকা নিয়ে জমি থেকে ভুট্টা কাটছেন। আবার কেউ ভুট্টার মোচা জ্বালানি হিসেবে সংগ্রহ
করছেন।
কৃষকরা জানান, হঠাৎ বন্যার পানি আসায় তাঁদের জমির ভুট্টা ডুবে গেছে।
গতবছর বিঘাপ্রতি যেসব জমি থেকে ভুট্টা পেয়েছিল ৩৫ থেকে ৪০ মণ এবার এই দূর্যোগে সেই জমি থেকে ভুট্টা পাচ্ছেন ১৫ থেকে ২০ মণ।
ডাহিয়া গ্রামের কৃষক আরিফুল ইসলাম বলেন, আমি ৯ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। পানিতে সব জমি ডুবে গেছে। নৌকা আর শ্রমিক নিয়ে
অর্ধেক জমির ভুট্টা কেটে খোলায় তুলেছি। এখন খোলাতেও পানি আসায় ভুট্টা মাড়াই নিয়ে বিপদে আছি।
একই গ্রামের আরেক কৃষক রুহুল আমিন বলেন, আমার ২৩ বিঘা জমির ভুট্টা কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলেছি। গতবারের চেয়ে অর্ধেক ফলন পেয়েছি। আমার প্রতি বিঘায় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। এই অবস্থায়
দেনা পাওনা শোধ করতে পারবো না।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে সিংড়া উপজেলায় ১৭’শ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে এর
মধ্যে চলনবিলের ডাহিয়া ও ইটালী ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হেক্টর জমির ভুট্টা আগাম বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। নৌকা দিয়ে কৃষকরা এসব জমির
ভুট্টা কাটছেন। তাতে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ভুট্টা কৃষকরা ঘরে তুলতে পারবেন।
বাকি অঞ্চলে ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে ৯০ ভাগ ভুট্টা কাটা মাড়াইয়ের কাজও শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি।