মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের আবেগঘন ক্ষুদে বার্তা পাশে দাড়ালেন ইউএনও


নাটোর প্রতিনিধি
স্ত্রীর অল্প একটু জমির ওপর গড়ে উঠেছে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আশরাফুল ইসলামের একটি লিচু বাগান। বাগানে রয়েছে ১৭টি গাছ। প্রতিটি গাছে ঝুলছে রসালো লিচু। স্ত্রী, দুই ছেলে আর মেয়ে নিয়ে তার মধ্যবিত্ত্ব পরিবার। বাড়ি নাটোরের গুরুদাসপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের উত্তরনারীবাড়ি মহল্লায়।
পান নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা। সেই ভাতার টাকা আর দুই ছেলের অল্প কিছু আয়ের অংশ দিয়েই চলে তাদের সংসার। করোনা
পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে তাদের সপ্ন।
গত বছরে ৬০ হাজার টাকায় বাগানটি বিক্রি করেছিলেন তিনি। এ বছরও অনেক চেষ্টার পর ৩২ হাজার টাকায় বাগানটি
বিক্রি করেছিলেন এক বিক্রেতার কাছে। বায়না হিসাবে ২ হাজার টাকাও দিয়েছিলো। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারনে সেই বিক্রেতা মুঠোফনে জানান তার বাগানটি তিনি নিতে
পারবেন না। এমন অবস্থায় ভেঙ্গে পড়েন মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।
তারপরও সামনে ঈদ। এমন অবস্থায় নিজের অনুভুতি প্রকাশ করে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয় মুক্তিযোদ্ধার ছোট সন্তান। ঘটনার রাতেই স্ট্যাটাসটি নজরে আসে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ
তমাল হোসেনের। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের এমন স্ট্যাটাস বিমর্ষ করে ইউএনও কে। পরদিন রোববার দুুপুরে মুক্তিযোদ্ধার বাগানে
গিয়ে তার লিচু বাগান পরিদর্শন করেন ইউএনও। তারপর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্রয় করা হয় বাগানটি। বায়না হিসাবে পাঁচ হাজার টাকাও দেওয়া হয়েছে এবং তাদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস ও দেন তিনি।

মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আশরাফুল ইসলাম জানান, মুক্তিযোদ্ধার ভাতা ও দুই ছেলের অল্প কিছু আয়ের অংশ দিয়ে চলে তার সংসার। তাদের মধ্যবিত্ত্ব পরিবার। প্রতি বছরে বাগান থেকে কিছু টাকা আসে। করোনার প্রভাবে তার বাগানটি বিক্রি করতে পারছিলো
না। হতাশ হয়ে পরেছিলো তার পরিবার। এমন অবস্থায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইউএনও তমাল হোসেন বাগানটি ক্রয় করায়
তার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেছেন।
ইউএনও তমাল হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের ক্ষুদে বার্তা তাকে বিমর্ষ করেছে। ঘটনার দিন রাতেই তার ঠিকানা নিয়ে পরদিন দুপুরে তার বাগান পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শন শেষে তার বাগানটি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্রয় করা হয় এবং অগ্রিম হিসাবে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। লিচু বিক্রির উপযুক্ত সময় না হওয়া পর্যন্ত বাগানটি পরিচর্চা ও পরিদর্শন করার জন্য রাখা হয়েছে একজন উপ সহকারী কৃষি
কর্মকর্তা(বিএস) এবং ইউনিয়ন ভূমি সহকারীকে। তারপরও
তাকে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি
জানান।#