আদিতমারীতে মানবিক সহায়তা কার্ডে অনিয়মের অভিযোগ

করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষদের সহায়তায় সরকারিভাবে মানবিক সহায়তা কার্ড প্রদানে লালমনিরহাটে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে বুধবার (১৩ মে) দুপুরে আদিতমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পাঁচটি ওয়ার্ড কমিটির সদস্য সচিবরা ।অভিযোগে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের প্রদুর্ভাবে কর্মহীন দুস্থ পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা দিতে সরকার মানবিক সহায়তার রেশন কার্ড তৈরির উদ্যোগ নেয়। এ কর্মসূচির সুবিধা ভোগীর তালিকা প্রণয়ন করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে পাঁচজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বসহ ৯ সদস্যের মানবিক সহায়তা কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি সদস্য সচিব এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড ইউপি সদস্য। ওয়ার্ড কমিটি উপকারভোগীর তালিকা প্রণয়ন করে ইউনিয়ন এবং ইউনিয়ন কমিটি তা উপজেলা কমিটিকে সরবরাহ করার কথা।কিন্তু উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম প্রধান ওয়ার্ড কমিটির তোয়াক্কা না করে নিজের পছন্দের লোকদের নামের তালিকা ভুক্ত করে সহায়তা প্রদানের জন্য চুড়ান্ত করেছেন। গোপনে তালিকা চূড়ান্তের বিষয়টি জানতে পেয়ে ওই ইউনিয়নের ৫-৯ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির পাঁচজন সদস্য সচিব ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।এমন অনিয়ম শুধু সারপুকুর ইউনিয়নে নয়। লালমনিরহাট সদর উপজেলার হারাটী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক ওয়ার্ড কমিটিকে না জানিয়ে তালিকা প্রস্তুত করেছেন। যার বিরুদ্ধে ইউপি সদস্যরা মঙ্গলবার (১২ মে) সদর ইউএনও বরাবরে লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ইউপি চেয়ারম্যানরা নিজেদের পছন্দের ভোটারদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে গোপনে তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলায় পাঠাচ্ছেন। ফলে প্রকৃত উপকার ভোগীরা সরকারি এ সহায়তায় থেকে বঞ্চিত থাকছেন বলে অভিযোগ করেন ওয়ার্ড কমিটি সদস্যরা।সারপুকুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সচিব ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ বলেন, ওয়ার্ড কমিটিকে না জানিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান গোপনে নিজের পছন্দের লোকদের নাম তালিকা করে উপজেলায় পাঠিয়েছেন। এ কারণে পাঁচটি ওয়ার্ড কমিটির পক্ষে পাঁচজন সদস্য সচিব ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি সারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আজিজুল ইসলাম প্রধান বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে ইউপি সদস্যরা তালিকা করে পরিষদে জমা করেছেন। যা চূড়ান্ত করে উপজেলায় পাঠানো হবে।আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানরা ওয়ার্ড কমিটি জমা না দিয়েই উপকারভোগীর তালিকা পাঠিয়েছেন। যা যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। তবে ওয়ার্ড কমিটির সঙ্গে সমন্বয়ন না করা হলে তার দায়দায়িত্ব ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে নিতে হবে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ১০ হাজার ৫১৬ জন উপকারভোগী নির্বাচন করা হবে বলেও জানান তিনি।