ঘাসফড়িং , কক্সবাজারের সেই পোকা পঙ্গপাল নয়

কক্সবাজারের টেকনাফের লম্বারী পাড়ার একটি বাগানে গত ১৮ এপ্রিল পঙ্গপালের মতো এক ধরনের পোকা কিছু গাছের পাতা খেয়ে ফেলেছে। এসব পোকার নমুনা পরীক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্র ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এগুলো নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।

ইতোমধ্যে ভারতের কিছু জায়গায় গত মার্চ মাসে পঙ্গপাল আক্রমণ করেছে। বিধ্বংসী এই পোকার আক্রমণের আশঙ্কায় সতর্ক আছে বাংলাদেশ। পঙ্গপালের আক্রমণ এড়াতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত ২২ এপ্রিল টেকনাফ উপজেলা কৃষি থেকে রিপকর্ড কীটনাশক ব্যবহার করে কিছু পোকা মেরে ফেলেন। কীটনাশক ব্যবহারের পর পোকা কিছুটা কমেছিল। কিছুদিন পর আবারও পোকার পরিমাণ বেড়ে যায়। আবারও ওই কৃষি কর্মকর্তাকে জানানো হলে তিনি ৩০ এপ্রিল এসে আবারও কীটনাশক ব্যবহার করে অধিকাংশ পোকা মেরে ফেলেন। টেকনাফ উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বলেছিলেন, এগুলো পঙ্গপাল নয়। পঙ্গপাল তো উড়তে পারে। কিন্তু এ পোকা উড়তে পারে না। এগুলো কালো রঙের পোকা।

কক্সবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবুল কাশেম বলেন, টেকনাফের পোকাগুলোর ভিডিও কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীর কাছে পাঠিয়েছিলাম। তারা জানিয়েছেন, এগুলো পঙ্গপাল নয়, ঘাসফড়িংয়ের একটি প্রজাতি হতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেরে একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘গত ৪৯ বছরে বাংলাদেশে পঙ্গপালের আক্রমণ হয়নি। ভুট্টায় আর্মি ওয়ার্ম নামে একটি পোকা হয়েছিল। আমরা এটি নিয়ন্ত্রণ করেছি। পঙ্গপালের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে প্রস্তুতি নিচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের দীর্ঘ ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এ দেশে পঙ্গপালের আক্রমণের আশঙ্কা নেই। পঙ্গপাল শুষ্ক আবহাওয়া ও মরুভূমির পোকা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ বলেছেন, কিছু পোকা টেকনাফের একটি গ্রামে বনজ গাছের ওপর বসে পাতা খাচ্ছে। ইতোমধ্যে ওষুধ দিয়ে স্প্রে করায় পোকা অনেক কমেছে। যদি কিছু অবশিষ্ট থাকে তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এগুলো মিয়ানমার বা ভারত থেকে আসতে পারে। এখনই দমানো না গেলে দুই থেকে ছয় মাসের মধ্যে ফসলের খেতে তাণ্ডব চালাবে।

কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, পঙ্গপাল শুষ্ক আবহাওয়া পছন্দ করে। এ দেশের আবহাওয়া আর্দ্র। তাই এ দেশে পঙ্গপালের আক্রমণের আশঙ্কা কম।