দিনাজপুরের খানসামা (পাকেরহাট) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ-২০২০ উপলক্ষে উপজেলার গর্ভবতী,গরীব ও দুস্থ পুষ্টিহীন মহিলাদেরকে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়ার কথা থাকলেও উপজেলা স¦াস্থ্য বিভাগ নাম মাত্র ফটোসেশন করে ১৫ থেকে ২০জন মহিলা-পুরুষকে একটি করে সাবান দিয়েই জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সাবান পাওয়া কয়েকজন জানান, তাদেরকে মাস্ক ও সাবান দেওয়ার কথা বলে রাস্তা থেকে ডেকে নিয়ে একটি করে গোসল করা ৩০ টাকা মূল্যের লাইফবয় সাবান দিয়ে পুষ্টি সপ্তাহের ব্যানারে ছবি তুলেছেন।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২৩ থেকে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ পালন করার কথা। এ উপলক্ষে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল গুলোতে দুস্থ ও গরিব লোকদের ত্রাণ সামগ্রী উপহার দেওয়ার জন্য ১ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক উপজেলায় গর্ভবতী,দুস্থ ও গরিব নারী-পুরুষকে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হলেও খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এসবের কিছুই দেয় নাই।
উপজেলার পাকেরহাট এলাকার কুলি সামসুল আলম বলেন, ‘হামরা পাকেরহাটে ট্রাক লোড করিছি এমন সময় হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী এসে আমাদেরকে মাস্ক ও সাবান দেওয়ার কথা বলে ডেকে আনে। এরপর ৩০ টাকা মূল্যের একটি করে লাইফবয় সাবান হাতে দেয়। পরে আমরা সাবান নিয়ে ছবি তুলে চলে আসি।’
এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা.শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন,‘আজ (বুধবার) সকালে হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা স্যার ফোন করে জানান, আজকে পুষ্টি সপ্তাহের শেষ দিন। কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সাবান গুলো বিতরণ করে দিয়েন।
ওই কর্মকর্তার হাসপাতালে উপস্থিত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্যার ছুটিতে আছেন। স্যার আমাকে আরও বলেছেন, আজকে আপাতত অনুষ্ঠানটা সেরে নেন পরে আরো কর্মসূচী গ্রহণ করা হবে।’
স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে সকল স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করলেও ওই কর্মকর্তা প্রায়ই হাসপাতালে অনুপস্থিত থাকেন বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকেই।
খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা.আবু রেজা মো: মাহমুদুল হকের সাথে একাধিকবার মোবাইল ফোনে ও মেসেজে বক্তব্য নেয়ার জন্য ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেন নাই।
এবিষেয়ে জানতে চাইলে ইউএনও আহমেদ মাহবুব-উল ইসলাম বলেন,‘পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে যে বরাদ্দ আসছে সেগুলো দুস্থ ও গরিব পরিবারকে দেওয়ার কথা। অন্য অনেক উপজেলায় এটা করা হয়েছে। কিন্তু খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য শুধু মাত্র একটি করে সাবান দেওয়া হয়েছে বলে আমি জেনেছি।’
এ বিষয়ে দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘আমার সাথে ওই উপজেলার স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে।তিনি অসুস্থ্য থাকায় ছুটির বিষয়টি তাৎক্ষনিক আমাকে জানাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন। আর পুষ্টি সপ্তাহের ১ লাখ টাকা খরচ না করে মাত্র একটি করে সাবান দিয়েছেন এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, ‘আমাকে খানসামা উপজেলার স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা বলেছেন, পুষ্টি সপ্তাহের টাকা আমি অফিসে গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে সমন্বয় করে দুস্থদের মাঝে বিতরণ করব।’