ভাঙ্গুড়ায় রেল লাইনের গাছ কেটে নিচ্ছে দুষ্কৃতকারী

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় রেল লাইনের ধার থেকে গাছ কেটে নিচ্ছে আনিসুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। সোমবার দুপুরে ওই ব্যক্তি ভাঙ্গুড়া বড়াল ব্রিজ রেল স্টেশনের পশ্চিম পাশ থেকে কয়েকটি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে নিয়ে নসিমন গাড়িতে করে নিয়ে যায়। এ সময় আরও কয়েকটি গাছ কাটার প্রস্তুতি চলছিল। আনিসুর রহমান ভাঙ্গুড়া পৌরশহরের সারুটিয়া মহল্লার মৃত আরশেদ আলীর ছেলে। সে পেশায় একজন কাঠ ব্যবসায়ী। এই গাছ পাচারের সঙ্গে স্থানীয় রেলের কর্মচারীরাও জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গুড়া রেল স্টেশন ও বড়ালব্রিজ রেলস্টেশনের মাঝখানের এক কিলোমিটার এলাকায় রেললাইনের ধার থেকে চারটি ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে নসিমন গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসময় আরো গাছ কাটার জন্য ১০/১২ জন শ্রমিক প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গাছ কাটার নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন পৌর শহরের সারুটিয়া মহল্লার বাসিন্দা ও স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান এবং ভাঙ্গুড়া রেল স্টেশনের কর্মচারী রুবেল আহমেদ।  
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, প্রায় ১০ বছর আগে ভাঙ্গুড়া রেলস্টেশন থেকে বড়ালব্রীজ রেলস্টেশন পর্যন্ত রেল লাইনের দুই ধার দিয়ে সামাজিক বনায়নের জন্য ইউক্যালিপটাস গাছের চারা রোপণ করেন ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বাকি বিল্লাহ। গাছগুলো ব্যবহার উপযোগী হওয়ার পর থেকেই স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান রেল কর্মচারীদের যোগসাজশে মাঝেমধ্যেই রেল লাইনের ধার থেকে গাছ কেটে নেন। আনিসুর রহমান স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের ছত্রছায়ায় চলাফেরা করেন বলে তার এই অপকর্মে কেউ প্রকাশ্যে বাধা দিতে সাহস পান না। এমনকি এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন জেনেও কোনো হস্তক্ষেপ করেন না। 
ভাঙ্গুড়া রেলস্টেশনের কর্মচারী রুবেল আহমেদ বলেন, রেল লাইনের সিগন্যাল ক্লিয়ারের জন্য ভাঙ্গুড়া উপজেলার হেড মিস্ত্রি সরোয়ার হোসেনের নির্দেশে রেললাইনের দুই ধার পরিষ্কার করা হচ্ছে। তাই এই কাজে সহযোগিতা করতে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান গাছ কেটে নিচ্ছে। এর বেশি কিছু তিনি জানেন না।
এ বিষয়ে হেড মিস্ত্রির সরোয়ার হোসেন বলেন, ট্রেন চলাচলের সময় কিছু গাছ সিগনালে বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। তাই রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং দশ বছর আগে এই গাছের চারা রোপনকারি ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বাকি বিল্লাহর অনুমতি নিয়ে এক ব্যবসায়ী গাছগুলো কেটে নিচ্ছে।
তবে ভাঙ্গুড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বাকি বিল্লাহ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান।
এব্যাপারে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, সরকারিভাবে দরপত্র ছাড়া সরকারি জায়গা থেকে কোনো গাছ কেটে নেওয়ার এখতিয়ার কারো নেই। প্রশাসনের লোক পাঠিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে গাছ উদ্ধার করা সহ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনা হবে।