রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার হাট বাজার গুলোতে পশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দেয়ায় পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে কৃষকরা। ফলে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষকেরা। এছাড়া বাজারে পশু খাদ্য হিসাবে চাল বা গমের ভুষি থেকে যেসব তৈরি খাদ্য বাজারে পাওয়া যায় তার দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা করে বেড়েছে। তবে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় করোনাকে পুজি করে দোকানীরা যে যার মত দাম নিচ্ছে হাকিয়ে। এলাকাঘুরে ও কৃষকদের সাথে কথ্ াবলে জানা গেছে, প্রতিবছর এই সময় পশু খাদ্যের কিছুটা সংকট দেখা দেয়। তবে ইরি বোরো ধান ওঠলে সেই সংকট আর থাকে না। এবার ইরি বোরো ধান ওঠতে আরো প্রায় দুই সপ্তাহ মত বাকি। কৃষকদের মতে এ সময় পাশ্ববর্তী নাটোর ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা খড় বা আউড় ছিল তাদের একমাত্র ভরসা। তারা জানান, চলমান করোনা সংকটের কারণে ওই্সব উপজেলা থেকে কোনরুপ যানবাহনে করে খড় বা আউড় আনা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া বাজারে প্রচলিত যেসব পশু খাদ্য পাওয়া যায় পরিবহন সংকটের কারণে সেইসব খাদ্যের দামও এখন আকাশ ছোয়া। কৃষকরা না পারছেন স্বল্প মূল্যে খড় কিনে গরুকে খাওয়াতে না পারছেন আবার খাদ্য সংকটের কারণে গরু গুলোকে বিক্রি করতেও পারছেন না দাম কমে যাওয়ার কারণে। মাড়িয়ার কৃষক রফিকুল ইসলাম ও সেকেন্দার আলী জানান, তাদের বাড়িতে চারটি করে গরু রয়েছে। এখন সেগুলোর খাওয়াতে গিয়ে তারা হিমসিম খাচ্ছেন। বাজারে ১০ গুন্ডা(৪০টি) আউড়ের দাম নিচ্ছে ২শ টাকা। আগে সেগুলো ১ শ থেকে ১শ ২০ টাকায় পাওয়া যেত। তারা জানান, একই ভাবে দাম বেড়েছে চাল বা গমের ভুষির। প্রতি কেজি ভুষিতে গড়ে ২০ থেকে ৩০ টাকা দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অবস্থায় তারা তাদের গৃহপালিত পশু গরু গুলোকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে। মাড়িয়ার আরেক কৃষানী শাহানা বেগমের রয়েছে গরু মোটাতাজা করণ প্রকল্প। তারা নিজস্ব খামারে ১২ টি গরু রয়েছে। নিজের ধানচাষ থেকে জমানো খড় দিয়েই তিনি এসব গরু লালন পালন করে আসছেন। সাথে অন্যান্য খাবারও বাজার থেকে কিনে আসেন। তবে এবার তার জামানো খড়ও শেষ হয়ে এসেছে। এখন বাজার থেকে তাকে ৪০ পিচ খড়ের আটি ২শ টাকায় কিনে এনে গরুকে খাওয়াতে হচ্ছে। অধিক মূল্যে এভাবে খাদ্য কিনে গরুকে লালন পালন করে লাভের হিসাব করতে তিনি হিমসিম খাচ্ছেন। এছাড়া ওষধ ও অন্যান্য উপকরন তো রয়েছে। সামনে কুরবানীর সীজনে এসব গরু তার বিক্রি করার টার্গেট রয়েছে। তবে গো খাদ্যের সংকট ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে শাহানা বেগম গরু গুলো এখনই বিক্রি করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন। তবে বাজার যাচাই করে তিনি দেখেন এখন বাজারে গরুর দাম বেশ পড়ে গেছে। তাই তিনি উভয় সংকটে পড়েছেন। উপজেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ড: আতাবুর রহমান বলছেন, পশু খাদ্য নিয়ে সর্বত্রই সংকট রয়েছে। তবে যে সব এলাকায় বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে সেখানে এই সংকট অনেকটা লাঘব হয়েছে। বাগমারাতেই আর সপ্তাহ দেড়েকের মধ্যে যখন বোরো ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হবে তখন এই সংকট আর থাকবে না বলে জানান তিনি।