ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়াস্থ পাবনা সুগার মিলের কাছে আখ চাষিদের পাওনার পরিমান প্রায় ২৫ কোটি এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের ৬ কোটি টাকা। করোনা ভাইরাসের এই দুঃসময়েও কৃষকরা তাঁদের আখ বিক্রির পাওনা টাকা এবং শ্রমিক কর্মচারীরা ৩ মাসের বেতন পাচ্ছেন না। এই অবস্থায় পরিবার-পরিজন নিয়ে আখচাষিরা চরম অর্থ সংকটে পড়েছেন। আখচাষী এবং তাঁদের সংগঠনের নেতাদের সাথে কথা বলে এতথ্য জানা গেছে। মিল কর্তৃপক্ষ বলছেন চিনি বিক্রি না হওয়ায় চাষীদের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না।
আখচাষি কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং ঈশ্বরদীর জাতীয় পুরুস্কারপ্রাপ্ত শাহজাহান আলী বাদশা জানান, কৃষকদের সারাদেশের মিলগুলোর কাছে প্রায় ১৭৮ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। আর পাবনা সুগার মিলের কাছে স্থানীয় কৃষকদের পাওনা প্রায় ২৫ কোটি টাকা। আখ চাষে বীজ, সার, সেচ, পরিচর্যা ইত্যাদি করতে গিয়ে টাকা ধার-দেনা করতে হয়। মিলের টাকা পেলে পরিশোধ করেন চাষিরা। কিন্তু বিগত ৬-৭ মাস যাবত বকেয়া পাওনা মিল কর্তৃপ না দেয়ায় করোনা পরিস্থিতিতে নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন আখচাষিরা।
ঈশ্বরদী কৃষক লীগের যুগ্ম আহব্বায়ক ও আখ চাষী সমিতির সদস্য মুরাদ মালিথা জানান, মিল চালু রাখায় আখচাষিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অথচ এই দুঃসময়েও যদি পাওনা টাকা এভাবে আটকে রাখা হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই কৃষকরা আখ চাষে নিরুৎসাহিত হবেন।
আখচাষি রকিবুল ও সালাম জানান, করোনার সংকটকালে বাড়ি থেকে বের হওয়া নিষেধ। কোনো কাজ-কাম নেই। সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়ছে। কারও কাছে হাত পাতার অভ্যাস নেই।
পাবনা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুদ্দিন জানান, উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়ায় আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রায় ৪০ কোটি টাকার চিনি গুদামে মজুদ রয়েছে। ৭ই মার্চ চলতি মাড়াই মৌসুম শেষ হয়েছে।
পাবনা সুগার মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদুল ইসলাম শাহিন জানান, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের বেতন, ওভারটাইম ইত্যাদি মিলিয়ে শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনার পরিমাণ ৬ কোটি টাকা। বর্তমানে করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতিতে শ্রমিকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। তিনি আরো বলেন, শুধু শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া আছে তাই নয়, মিলে আখ সরবরাহকারী চাষিরাও বিপাকে পড়েছেন। তাদেরও আখের মূল্য পরিশোধ করা হয়নি। ##