আলীকদম উপজেলায় এখনো কোন করোনা রোগি সনাক্ত হয়নি, তবে বিভিন্ন উপসর্গের কারণে ২২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে একজনও পজেটিভ পাওয়া যায়নি। প্রাতিষ্ঠানিক কোন কোয়ারেন্টাইন নেই তবে অপ্রাতিষ্ঠানি কোয়ারেন্টাইনের ২৩ জন আছে। আরো দু-একজন বাড়তে পারে। সরকারী হাসপাতালে আটটা থেকে বারটা পর্যান্ত বহিঃর্বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে রোগীর সংখ্যা আগের তুলনায় অনেক কম। একইভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতেও সাধারণ চিকিৎসা সেবা অব্যহত আছে। প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিকে পিপিই সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে। মুঠোফোনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।
বিশ্বব্যাপি করোনা সংক্রমন জনিত কারণে গত ২৪ মার্চ আলীকদম উপজেলার পার্শ্ববর্তী কক্সবাজার জেলায় একজন করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পর পার্শ্ববর্তী আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাকে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে লক-ডাউন ঘোষনা করেন আলীকদম উপজেলা প্রশাসন। একই সাথে সরকার ঘোষিত ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষনার পর বেকার হয়ে পড়েছে আলীকদম উপজেলার খেটে খাওয়া লোকজন। সরকারি ও বেসরকারী ভাবে বিভিন্ন পর্যায়ে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হলেও চাল, ডাল, আলু তৈল ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক জিনিসের চাহিদা মেটাতে না পারায় বিপাকে পড়েছে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোকজন। হালে দুর্বিসহ দিনাতিপাত করছে আলীকদমের বৃহদাংশ জনসাধারণ। তবে লক-ডাউন উপেক্ষ করতেও পিছ পাঁ হয়নি এমন লোকজনের পাল্লাও বেশ ভারি। আলীকদম সেনা জোন, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের দিন রাত পরিশ্রমের পরও মিলছেনা লক-ডাউনের প্রকৃত চিত্র।
তবে বসে নেই প্রশাসন এবং সরকারী-বেসরকারী সংগঠনগুলো। প্রতিদিনই বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সরকারী-বেসরকারী সংগঠন জনসাধারণের মাঝে ত্রাণ, লিপ্লেট, সাবান ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ সহ সচেতনতামূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছে। উপজেলার আনাচে-কানাছে ঘুরে ঘুরে মাইকিং করে জনসাধারণকে সচেতন করে আসছে আলীকদম সেনা জোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্ণেল সাইফ শামীম, আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার সায়েদ ইকবাল ও অফিসার্স ইনচার্জ কাজী রকিব উদ্দিন। তাদের সাথে মাঠে রয়েছে আলীকদম উপজেলার চার ইউপি চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, রেড ক্রিসেন্ট সহ বিভিন্ন সমাজিক সংগঠন। তবে এসব কর্মকান্ডে দেখা মিলছেনা আলীকদম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে। গত ১২ এপ্রিল সাংবাদিক মমতাজ উদ্দিন আহমদ তার ভেরিফাইড ফেসবুকে ‘রোমের নিরো এবং আলীকদমের নিরো’ শিরোনামে একটি ষ্টাটাসে রোমের নিরোর সাথে তুলনা করেন আলীকদমের এই কর্ণধারকে।
এদিকে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এবং নিয়ম মেনে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয়ের কথা থাকলে ও তা মানছেননা কৃষি পন্য বিক্রেতা ও ক্রেতারা। তাই করোনা ঝুঁকি এড়াতে অস্থায়ীভাবে সবজি বাজার আলীকদম আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আলীকদম সেনা জোনের জোন কামন্ডার লেঃ কর্ণেল সাইফ শামীম। তিনি বলেন এর পরও যদি জনগণ সচেতন না হয় তাহলে প্রশাসন আরো কঠোর হতে বাধ্য হবে। সার্বিক পরিস্থিতি জানতে চাইলে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার সায়েদ ইকবাল বলেন, এখনো কিছু সংখ্যক লোকজন প্রয়োজন ব্যতিরেকে অযথা ঘোরাফেরা করছেন এবং কিছু ব্যবসায়ী আছেনা যারা নিয়মের বাইরেও দোকান পাঠ খোলা রাখছেন। আমরা এধরণের অনিয়ম পেলে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। প্রয়োজন হলে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।