অনাবিল ডেস্ক :
করোনাভাইরাসের থাবায় বিপর্যস্ত বিশ্ব। এ সময়ে একটি সুখবর দিয়েছে একদল বিজ্ঞানী। গবেষণায় তারা একটি অ্যান্টি-প্যারসিটিক বা পরজীবীনাশী ওষুধ পেয়েছেন যা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মেরে ফেলতে সক্ষম। আর সে ওষুধটি বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উৎপাদন করা হচ্ছে।মালয়েশিয়ার মোনাশ বায়োমেডিসিন ডিসকভারি ইন্সটিটিউট ও অস্ট্রেলিয়ার ডোহেরটি ইন্সটিটিউট অব ইনফেকশন অ্যান্ড ইম্যুনিটি (অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেলবোর্ন হাসপাতালের সমন্বিত উদ্যোগ) যৌথ গবেষণায় এ ওষুধের খোঁজ মিলেছে। গবেষক দলের প্রধান ড. কেলি ওয়াগস্টাফ এক বিবৃতিতে এ শুক্রবার এ তথ্য দিয়েছেন।দ্য সান ডেইলি, মালয়েশিয়া।এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ওষুধ বিশেষজ্ঞদের একটি দল করোনাভাইরাসের টিকা ইঁদুরের দেহে প্রয়োগ করে সফলতা পাওয়ার কথা জানিয়েছে। তারা বলছেন, টিকাটি প্রয়োগের পর ইঁদুরের দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। এখন এটি তারা মানবদেহে প্রয়োগ করতে চান। চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ তথ্য উঠে আসে। সায়েন্স ডেইলি ও ওয়াশিংটন টাইমস।ড. কেলি বলেন, গবেষণাকালে আমরা দেখতে পেয়েছি, অ্যান্টি-প্যারসিটিক ওষুধ ইভারমেকটিন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সার্স-করোনাভাইরাস-২-এর কোষের বৃদ্ধি থামিয়ে দিয়েছে। এমনকি মাত্র এক ডোজ ওষুধও ওই সময়ের মধ্যে সব ভাইরাল রিবাউন্সেলিক এসিড (আরএনএ, যেখানে সব জীবিত কোষ থাকে) কার্যকরভাবে দূর করতে পেরেছে। এমনকি ২৪ ঘণ্টার মধ্যেও তা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় তা কমিয়ে ফেলতে পেরেছে।ড. কেলি আরও বলেন, এ পরীক্ষা আমরা শুধু গবেষণাগারেই করেছি। কোনো প্রাণিদেহে বা মানুষের শরীরে তা পরীক্ষা করা হয়নি। এখন আমরা প্রাণিদেহে এর পরীক্ষা চালাব। সেখানে ইতিবাচক ফল এলে ও নিরাপদ প্রমাণিত হলে আমরা যত দ্রত সম্ভব আমরা মানবদেহের জন্য ডোজ নির্ধারণ করে দেব।ড. কেলি বলেন, ইভারমেকটিন নিরাপদ ওষুধ হিসেবে সারা বিশ্বেই অনুমোদিত। এটি এইচআইভি, ডেঙ্গি, ইনফ্লুয়েঞ্জা ও জিকা ভাইরাসসসহ বিভিন্ন ভাইরাসজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে থাকে।
লানসেটে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় ও পিটসবার্গ মেডিকেল সেন্টার যৌথভাবে এ গবেষণাটি চালায়। আর তারা টিকাটির নাম দিয়েছেন ‘পিটকোভ্যাক’। গবেষক দলটি নতুন করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) জিন বিন্যাসে দেখতে পান এটি ২০০৩ সালে ছড়ানো সার্স-করোনাভাইরাস ও ২০১৪ সালে ছড়ানো মার্স করোনাভাইরাসের মতোই। সে অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েই তারা কোভিড-১৯-এর টিকা উৎপাদনে মনোযোগ দেন।পিট স্কুল অব মেডিসিনের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ডা. আন্দ্রে গামবট্টো বলেন, ভাইরাসের বিরুদ্ধে কিভাবে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে কাজে লাগাতে হয়, সেটা আমাদের জানা আছে। নতুন এ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কিভাবে লড়াই করতে হবে সেই ধারণা আমাদের যথেষ্ট আছে। প্রাথমিক কাজ সেরে আমরা অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে গেছি। এটি দ্রুত মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পারলে আমরা জানি না যে, করোনা মোকাবেলা এখনই করা না গেলে পরের অবস্থা ঠিক কী হবে।পিটস স্কুল অব মেডিসিনের ডার্মাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. লুইস ফালো বলেন, এ টিকা খুব পীড়াদায়ক হবে না। বসন্ত রোগের ভ্যাকসিনের আদলে এটি তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত অত্যধিক পরিমাণে প্রস্তুত করা সম্ভব।