করোনা নয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী ভুগছেন অ্যাজমায়। চিকিৎসা শেষে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে ছাড়পত্র দিয়েছে রাজশাহী সংক্রমণ ব্যাধি (আইডি) হাসপাতাল।
তবে আগামী ১০ দিন তাকে নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই ছাত্রের বাড়ি নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলায়। করোনা সন্দেহে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। করোনা শুনে তখনই তাকে রামেক হাসপাতাল সরাসরি রাজশাহী সংক্রমণ ব্যধি (আইডি) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।
ওই শিক্ষার্থী জানান, গত ১১ মার্চ রাজধানী ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় হাঁটার সময় একজন বিদেশির সঙ্গে তার ধাক্কা লাগে। এরপর বিশ্ববিদ্যাল বন্ধ হলে বাড়ি ফেরেন তিনি। প্রায় দশদিন পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
সন্দেহ করছিলেন, তিনি করো না আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। এ নিয়ে ২২ মার্চ তিনি আইইডিসিআর হটলাইনে যোগাযোগ করেন। নমুনা সংগ্রহে ওই সময় তার কাছে আসার কথা জানিয়ছিল আইইডিসিআর। কিন্তু দুদিন পেরিয়ে গেলেও যোগাযোগ করেনি। এরপর আবারও ওই ছাত্র হটলাইনে যোগাযোগ করেন। সেইবারও আইইডিসিআর নমুনা পরীক্ষায় আসার প্রতিশ্রুতি দেয়।
সাড়া না পেয়ে ২৫ মার্চ আবারও তিনি যোগাযোগ করেন। ওই সময় লক্ষণ শুনে তিনি করোনা আক্রান্ত নন বলে জানানো হয়। একই সঙ্গে নমুনা না নেয়ার কথাও জানানো হয় তাকে।
এই ঘটনায় হতাশ হয়ে ওইদিনই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন ওই শিক্ষার্থী। এরপর ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়।
শেষে নম্বর সংগ্রহ করে নিজ উদ্যোগে নাটোর জেলার করোনা হটলাইনে যোগাযোগ করেন। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারাই তাকে রামেক হাসপাতালে নেয়।
ওই শিক্ষার্থী আরও জানান, করোনা সন্দেহে স্বেচ্ছায় তিনি হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। হাসপাতাল থেকে ফিরে তিনি আবারও কোয়ারেন্টাইনে আছেন। তার বাড়িতে এখনও প্রশাসনের টানানো লাল নিশান উড়ছে।
নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিয়াঙ্কা দেবী পাল জানান, খবর পেয়ে আক্রান্ত সন্দেহ ওই ছাত্রকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়। তাছাড়া ওই বাড়িতে থাকা পরিবারের সদস্যদের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি বাসায় লাল নিশান টানিয়ে দেয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে রাজশাহী সংক্রমণ ব্যধি (আইডি) হাসপাতালের পরিচালক ডা. মামুনুর রশিদ বলেন, ওই শিক্ষার্থী করোনা আক্রান্ত সন্দেহ শনিবার রাতে এখানে ভর্তি করা হয়েছিল। রাতে তাকে আইসোলেশনেও রাখা হয়। কিন্তু তার সিনড্রোম কোভিড-১৯ এর সঙ্গে মিলছে না। তবে তার অ্যাজমার সমস্যা আছে। এজন্য পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে আজ (রোববার) সকালে ডিসচার্জ করে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে দশদিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।