পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার ঘোষ প্রণো স্থানীয় মহিলা আওয়ামী লীগের এক নেত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই নারী নেত্রী আফিয়া সুলতানা আখি ভাঙ্গুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। আফিয়া ওই ইউনিয়নের মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইউনিয়নের বেতুয়ান গ্রামের সোহেল রানার স্ত্রী। এছাড়া আফিয়া গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ৫০০ ভোটে পরাজিত হন।
লিখিত অভিযোগ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বুধবার ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদের ভূমি অফিস আগামী তিন বছরের জন্য ৩২ টি সরকারি জলমহাল নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ইজারা দেয়। এতে দিলপাশার ইউনিয়নের বহর গ্রামের একটি জলমহল ইজারা নেয়ার জন্য ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ ও আফিয়া সুলতানা আখি তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন মৎস্য সমিতি দিয়ে টেন্ডার ড্রপ করান। এসময় চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ তার টেন্ডার ড্রপ করার জলমহলে আফিয়াকে টেন্ডার ড্রপ করতে নিষেধ করেন। কিন্তু আফিয়া বেশি টাকায় টেন্ডার ড্রপ করে ওই জলমহল ইজারা পেয়ে যান। এতে ভূমি অফিসের সামনেই ওই চেয়ারম্যান আফিয়াকে ইজারা পাওয়া জলমহল ভোগ দখলে যেতে নিষেধ করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে ওই চেয়ারম্যান উপস্থিত অনেক মানুষের সামনে তাকে নানা কুরুচিপূর্ণ গালিগালাজ করেন। এরপর জলমহলে গেলে তাকে মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেন। বিষয়টি তাৎক্ষণিক আফিয়া সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে জানান। কিন্তু বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় শুক্রবার রাতে তিনি ভাঙ্গুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। উল্লেখ্য, এই চেয়ারম্যান দিলপাশার ইউনিয়নে একক আধিপত্য বিস্তার করতে বিভিন্ন সময়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করেছেন বলে অভিযোগ আছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রিপন সরকার বলেন, দিলপাশার ইউনিয়নের বহর গ্রামের একটি জলমহল নারীনেত্রী আখি ইজারা পায়। এতে চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ সকলের সামনেই আখিকে ওই জলমহলে না যেতে হুমকি দেয়। এসময় চেয়ারম্যান সকলের সামনেই বলেন, তার (চেয়ারম্যানের) এলাকায় কারো নেতৃত্বে চলবে না।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষ বলেন, ‘আখিকে কোনো প্রকার প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়নি। এমনকি ওই জলমহল নিয়ে তার সঙ্গে আমার বাকবিতণ্ডাও হয়নি। বহর গ্রামের বাসিন্দারা মসজিদ ও কবরস্থানের নামে একটি জলমহল ইজারা পায় যেন আমি শুধু সেই বিষয়ে কথা বলেছি। এখন আমার সময় খারাপ যাচ্ছে। তাই একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ করিয়েছে।’
দিলপাশার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান অশোক কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দুরভিসন্ধি মনে হয়েছে। ওই নারী নেত্রী জলমহলের বিষয় ছাড়াও অন্য কোনো বিষয়ের জেরে এই অভিযোগ করে থাকতে পারে। যেহেতু সে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তাই বিষয়টি থানা প্রশাসন দেখবে। এক্ষেত্রে আমাদের করার কিছু নাই।
ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাসুদ রানা বলেন, উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কর্তৃক এক নারীকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।