নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার লিচু গ্রাম খ্যাত নাজিরপুরে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মৌ চাষীরা। জীবিকা নির্বাহের জন্য পরিবার পরিজন রেখে গুরুদাসপুরে মধু সংগ্রহ করতে এসে নিজের কষ্টের কথা জানালেন মৌ চাষীরা।
টাঙ্গাইল জেলা থেকে গুরুদাসপুরে মধু সংগ্রহ করতে এসে মৌচাষী খাইরুল ও আকতার বলেন, বর্তমানে মধু বিক্রি করে কোনো লাভ হচ্ছেনা। মৌমাছির খাবার
চিনির খরচসহ যাতায়াত খরচ, শ্রমিকের খরচ ও বিভিন্ন জেলায় স্থান পরিবর্তন করলে কষ্টের দামই উঠেনা। অথচ লাভবান হওয়ার আশাতে মধু সংগ্রহ করার কাজে ১ লাখ টাকা ইনভেষ্ট করা হলেও আয়ের তুলনায় ব্যয়ই বেশি হচ্ছে।
বুধবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নাজিরপুরের বেড়গঙ্গারাম, মামুদপুর, জুমাইনগর এলাকায় মৌসুমি ফল লিচুর ফুটন্ত মুকুল থেকে মধু সংগ্রহ করছে
মৌমাছিরা। এসব সারিবদ্ধ লিচু বাগানে দুরদুরান্ত থেকে আসা মৌ চাষীরা মধু সংগ্রহের জন্য ২০০ বাক্স ভর্তি মৌমাছি নিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন। আর
চাষীদের মৌচাকের বাক্সে মধু জমিয়ে যাচ্ছে মৌমাছি। এদিকে ন্যায্যমূূল্য না পেয়ে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন মৌ চাষীরা। আয়ের চেয়ে ব্যয় হচ্ছে
বেশি। এভাবে চলতে থাকলে কর্মসংস্থান হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চাষীরা।
উপজেলার বেড়গঙ্গারাপুর লিচু বাগানে মধু সংগ্রহ করতে আসা জামালপুরের মৌ চাষী নুরুল আমিন দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ১২ বছর ধরে মৌচাষ করে আমি ও আমার পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছি। পরিবারকে রেখে জীবন জীবিকার উদ্দেশ্যে জঙ্গলে
জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছি মধু সংগ্রহ করতে। কিন্তু মধু বিক্রি করে ন্যায্য দাম না পাচ্ছিনা।
শাহজাদপুরের মৌচাষী ইমরান বলেন, মধু সংগ্রহের জন্য স্থান পরিবর্তন করতেই ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বিভিন্ন জেলা ঘুরে এই মধু সংগ্রহ করার পর বিভিন্ন
কোম্পানীর কাছে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে কোম্পানীরা মধু কিনছে না। এ
সুযোগে এফি, প্রাণ, অলোয়েস ও ইন্ডিয়ান ডাবর কোম্পানী গুলো কম দামে আমাদের কাছে থেকে মধু ক্রয় করছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম বলেন, মৌ চাষীদের মধুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না। গত বছর বাজার মূল্য কম ছিল। তবে এবারের মৌসুমে মৌচাষীরা মধু বাজারে ভাল দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।