নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার গড়মাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন শহীদ নির্মানের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ২০১৮ সালে এ নির্মাণ কাজে বরাদ্দকৃত মোট ৭০ হাজার টাকা থেকে মাত্র ১৮ হাজার টাকার ইট ক্রয় করার পর বাকী ৫২ হাজার টাকা বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাহফুজুর রহমান ওরফে মাহফুজের পকেটেই রয়ে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘ দিনেও শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ না করায় ক্ষুদ্ধ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সভাপতি মাহফুজ স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা হওয়ায় এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সাথে রাজনৈতিক ঘনিষ্টতা থাকার কারণে ভয়ে এ ব্যাপারে কেউ কোন কথা বলছেন না।
জানা যায়, ২০১৮ সালে নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ¦ অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এর প্রচেষ্টায় শহিদ মিনার নির্মানের জন্য ৭০ হাজার টাকা সরকারি বরাদ্দ আসে এই বিদ্যালয়ে। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার সকালে সরেজমিনে গড়মাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে দেখা যায় ৩ হাজার ইট বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অযতেœ ফেলে রাখা হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার জানান, এই বরাদ্দের টাকা উত্তোলন এবং শহীদ মিনার নির্মাণের লক্ষ্যে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে সকলের স্বাক্ষর নিয়ে টাকা সম্পূর্ণ উত্তোলন করেছেন সভাপতি মাহফুজ সাহেব। বরাদ্দের টাকা উত্তোলন হওয়ার পরে গত ২ বছরেও কেন শহীদ মিনার নির্মাণ হয়নি জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক এ ব্যাপারে কোন কথা বলবেন না মর্মে জানিয়ে সভাপতি মাহফুজুর রহমানের সাথে কথা বলতে বলেন।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর কয়েকজন জানান, বাংলা ভাষার জন্য যাঁরা জীবন দিয়েছেন সে সকল শহীদদের শ্রদ্ধার্থে বরাদ্দকৃত শহীদ মিনারের টাকা আত্মসাৎ এটা খুবই দুঃখজনক এবং জাতীর জন্য লজ্জার বিষয়। এলাকাবাসীরা আরও জানান- মাহফুজুর রহমান বিগত কিছুদিন আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আনোয়ার পারভেজ এর স্বাক্ষর জালিয়াতি করে গড়মাটি গ্রামের কাটাখালি খাল লিজ দিয়ে গ্রামবাসীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। এবিষয়ে সে সময় বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় কয়েক দফায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়ে মাহফুজের বিভিন্ন দুর্নীতির তিব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রæত শহিদ মিনারের টাকা ফেরত দেয়া সহ সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের সভাপতি পদ থেকে অপসারনের দাবি জানান এলাকাবাসী।
এ সকল বিষয়ে জানতে চাইলে, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মাহফুজ মুঠো ফোনে জানান- ‘আমাদেরও চলতে হয়, রাজনীতি করতে অনেক টাকার প্রয়োজন, আমি সম্মানিত পরিবারের সন্তান, আমার দিকে একটু খেয়াল রাখবেন, আমাকে একটু বাঁচাবেন’ আমি ঢাকায় আছি ফিরে এসে সাক্ষাতে কথা বলবো’।