নব্য ক্রীতদাস-১’

শুনেছি কবিরা বলতেন,
যে কবিতা শুনতে জানেনা,
সে আজীবন ক্রীতদাস থেকে যাবে?
তবে আমার দেখা স্বচ্ছ জানালার ফাঁকে,
ক্রীতদাসেরাই এখন কবিতা লেখে,
আর ক্রীতদাসেরাই শুধু কবিতা শোনে ও
কবিদের দেখা সেই রাজ্য কি আর বাস্তবে মেলে?

যারাই স্বাধীনতা পায় এই দেশে,
তারাই অপরকে পরাধীনতার জালে বেঁধে ফেলে,
তা না হলে লোকে বুঝবে কি করে যে, ক্ষমতা কতদূর চলে!
পরাধীনতার জালে বাঁধা মানে, একজন নতুন ক্রীতদাস তার দলে ও
সে অর্থে, তুমি আমি আর আসে পাশের লক্ষ-কোটি,
আমরা সবাই আসলে বেঁচে আছি তাদেরই ছায়াতলে,
নব্য ক্রীতদাস হয়ে ও

এখানে স্বাধীনতা মানে,
ওরা হত্যা করলেও বিচার করার সাহস হবে না কারোর ও
এখানে স্বাধীনতা মানে,
যে করেই হোক সত্য বলার সৎ-সাহস মিটিয়ে দেয়া হবে চিরতরে ও
এখানে স্বাধীনতা মানে,
যে যতই চুরি আর দুর্নীতি করুক, মেনে নিতে হবে তা অকাতরে ও
এখানে স্বাধীনতা মানে, যখন যতবার ইচ্ছে,
বেড়ে যাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম স্তরে স্তরে ও

এখানে স্বাধীনতা মানে,
তোমার আমার মাঝে সাঝেই, দুই এক বেলা উপোষ থাকা,
মাস শেষে ঋণের বোঝা বাড়িয়ে, সন্তর্পনে সেটা লুকিয়ে রাখা,
যাতে আত্মীয় বা প্রতিবেশীরা একটুও বুঝতে না পারে ও
এখানে স্বাধীনতা মানে,
অভাবের দায়ে নবাগতা সন্তানকে ডাস্টবিনে ফেলে আসা ও

এখানে স্বাধীনতা মানে,
মাঝে মাঝে নিজেকে যীশুর ন্যায় ক্রুশবিদ্ধ করার পরিকল্পনা ও
এখানে স্বাধীনতা মানে,
ঋণগ্রস্থ পিতার কন্যাকে কোলে নিয়ে রেলের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়া ও
এখানে স্বাধীনতা মানে,
আগামীকালের ভোট বাক্স আজ রাতেই ভরে ফেলা ও
এখানে স্বাধীনতা মানে,
স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেদের হাতে অস্ত্র আর মাদক তুলে দেয়া ও
এখানে স্বাধীনতা মানে,
তোমায় আমায় কোনোভাবেই নিজেদের মতো করে বাঁচতে না দেয়া ও
এখানে স্বাধীনতা মানে,
অধিকার হরণ করা ও