রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন নিয়ে উপাচার্যের বক্তব্যের ভৎসনা করছেন পপপপপপপপপপপপসসপ সংগঠনগুলোর নেতারা। বেশ কয়েক বছর ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, প্রগতিশীল ছাত্রজোট, ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো শুধু স্মারকলিপি নয়, নানাভাবে কর্মসূচি পালন করে আসছে। কিন্তু গত শনিবার (০৭ মার্চ) শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় ছাত্র সংগঠনগুলোর সমালোচনা করে উপাচার্য প্রফেসর এম. আব্দুস সোবহান বলেছিলেন, ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলো রাকসু নির্বাচন চায় না।
উপাচার্যের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠগুলোর নেতাকর্মীরা। এবিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, বর্তমান কমিটির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে স্মারকলিপি, “ভিসি স্যারের সাথে সাক্ষাৎ করেছি বেশ কয়েকবার। ছাত্রলীগ সব সময়ই রাকসু নির্বাচনের পক্ষে।”
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নেতা সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “উপাচার্য তার দায়িত্বশীল জায়গা থেকে এমন মিথ্যাচার করতে পারেন না। আমরা শুরু থেকেই রাকসু নির্বাচনের পক্ষে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকবার উপাচার্যের কাছে দাবি জানিয়েছি, প্রক্টর স্যারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। আমার যতটুকু মনে হচ্ছে প্রতিটি ছাত্র সংগঠনগুলোই রাকসু চাই শুধু মাত্র প্রশাসন ছাড়া”
এদিকে দীর্ঘ ২৭ বছর পর রাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে রাকসু আন্দোলন মঞ্চ। নির্বাচনের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করে আসছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এবিষয়ে সংগঠনটির আহ্বায়ক আবদুল মজিদ অন্তর জানান, “রাকসু নির্বাচন দিতে প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব। আমরা যদি রাকসু নির্বাচন না চাই তাহলে ২০১৭ সাল থেকে কেন এ বিষয়ে আন্দোলন করে আসছি? তারা হয়তো মনে করছে রাকসু নির্বাচন দিলে সবকিছু জবাবদিহিতার আওতায় চলে আসবে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী চালাতে বাধ্য হবে। একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে। অনিয়ম বন্ধ হয়ে যাবে এই আশঙ্কায় হয়তো প্রশাসন নির্বাচন দিচ্ছে না।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি শাকিলা খাতুন বলেন, নির্বাচন দিতে না পারার ব্যর্থতা মুছতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রসংগঠনগুলোর ওপর দায় চাপাচ্ছেন। প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো তো অবশ্যই, এমনকি আমি যতদূর জানি ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলসহ সকল সংগঠনই রাকসু নির্বাচন চায়।
রাকসু সংলাপ কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, উপাচার্য মহোদয় কোন প্রেক্ষাপটে এ কথা বলেছেন তা আমি জানি না। তবে তিনি সব সময় চান রাকসু পুনরায় চালু হোক। সকল ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাণের দাবি রাকসু নির্বাচন সফল ভাবে আয়োজন করতে পারলে তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জন্য বড় একটি প্রাপ্তি হবে। আমরা হল প্রাধ্যক্ষদের সঙ্গেও কথা বলেছি। অধিকাংশ প্রাধ্যক্ষই আবাসিক হলে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নেই বলে মত দিয়েছেন। তাছাড়া ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর মধ্যে সহাবস্থান নেই। আশা করি অতি শীঘ্রই এ বিষয়ে আবার কাজ হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২০ জানুয়ারি রাকসু নির্বাচনের দাবি উঠলে ক্যাম্পাসের ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট সংলাপ কমিটি গঠন করেন উপাচার্য। ওই বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মতামত গ্রহণের জন্য সংগঠনগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসলেও এখনও দৃশ্যমান কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।