নাটোরের বড়াইগ্রামে এলাকাবাসীর আপত্তি অমান্য করে প্রভাবশালীরা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গভীর থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এতে ওই এলাকায় নদী তীরবর্তী দুটি গ্রামের ঘরবাড়ি, সেতু ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ভুক্তভোগীরা বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছেন। তবে উত্তোলনকারীদের দাবী, পাশের রাস্তা পাকাকরণের জন্যই এ বালু তুলছেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত প্রায় ১০ দিন যাবৎ পাশের গুরুদাসপুর উপজেলার বৃ-চাপিলা গ্রামের জনৈক ভুট্টু মিয়া দুটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে উপজেলার কুমারখালী এলাকার বড়াল নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। স্থানীয়দের আপত্তি স্বত্তে¡ও প্রতিদিন বালু তুলছেন তারা। এভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বিপুল পরিমাণ বালু তোলায় এলাকার ফসলি জমি, সেতু ও বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে।
আদগ্রাম এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, বালু দস্যুরা রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বাধা দেয়ার সাহস করছে না। তারপরও আমরা বালু তুলতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তারা তা না মেনে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গভীর থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এতে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় স্থানীয় সেতুসহ নদীর তীরবর্তী কুমারখালী ও আদগ্রামের শত শত বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। এদিকে, ড্রেজিং পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করায় ভরা বর্ষায় বসত ভিটা, পান বরজ, ফসলি জমি ও পাশের সেতু নদীগর্ভে বিলীনের আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ২০১০ সালে বালু উত্তোলন নীতিমালায় যন্ত্রচালিত মেশিন দ্বারা ড্রেজিং পদ্ধতিতে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়াও সেতু, কালভার্ট, রেললাইনসহ মূল্যবান স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন করা বেআইনি। অথচ এক্ষেত্রে বালু দস্যুরা সরকারী ওই আইন অমান্য করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।
এ বিষয়ে বালু উত্তোলনকারী ভুট্টু মিয়া বলেন, প্রশাসনকে জানিয়েই এখানে বালু তোলা হচ্ছে। এ বালু দিয়ে নদীর পাশের রাস্তা পাকা করা হবে। তবে সরকারীভাবে বরাদ্দ থাকা স্বত্তে¡ও নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তুলে কেন রাস্তা করতে হবে জানতে চাইলে তারা কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ বলেন, গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়ে আমি বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে বালু তোলা আপাতত বন্ধ রাখতে বলেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।