বর্ষা মৌসুমের শেষে শুকিয়ে গেছে বৃহত্তর চলনবিলের প্রাণকেন্দ্র নাটোরের গুরুদাসপুর
উপজেলার প্রায় সবকটি নদনদী। সেই সাথে শুরু হয়েছে নদীর বুক থেকে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা না মেনে গুরুদাসপুরের পিপলা গ্রামে চলছে নদী খননযোগ্য। অনুমোদন ছাড়াই দিনমজুর ব্যবহার করে অবৈধভাবে চলছে এই নদী খনন।
সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনমজুরের কোদাল দিয়ে নদীর মাটি
কেটে কুত্তাগাড়ী ও ট্রলি ভর্তি করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা
হচ্ছে। গাড়ী থেকে কাদামাটি রাস্তায় পড়ে কর্দমাক্ত হয়ে ভারী যান চলাচলের কারণে সড়কের কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল
হোসেন শুক্রবার ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সরেজমিনে যান। তিনি নদী খনন বন্ধ করার জন্য অভিযান পরিচালনা করেন। তারপরও থেমে নেই কাজ।
এদিকে নদীটির পাড় ঘেষে রয়েছে একটি মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাঠসহ
বসতবাড়ী ঘর। বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী রাস্তা দিয়ে ট্রলিতে করে ওই নদীর মাটিবহন চলছে।
যার ফলে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় চলাচল ও পারাপার হতে গিয়ে ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।
যেকোন সময় ঘটতে পারে প্রাণহানীর ঘটনা।
বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এ বলা হয়েছে, বিপণনের উদ্দেশ্যে নদীর তলদেশ
হতে বালু বা মাটি উত্তোলন করা যাবে না। আবার পরিবেশ সংরক্ষন আইন ১৯৯৫ (১৯৯৫
সনের ১নং আইন) এ বলা হয়, সরকারি বা বেসরকারি স্থাপনা হতে অথবা আবাসিক
এলাকার সর্বনি¤œ এক কিলোমিটারের মধ্যে নদী খনন করা যাবে না।
ওই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আফসার আলী ফকির বলেন, পিপলা মাঝপাড়া গ্রামের মান্নান
প্রামানিকের ছেলে ফারুক প্রামানিকের নেতৃত্বে পিপলা নদীতে অবৈধভাবে নদী খনন
চলছে। গ্রামের সবাই মিলে বাধা দেওয়ার পরও তাদের কাজ বন্ধ করছে না। ফলে মাদ্রাসা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাঠসহ বসতী বাড়ী ধ্বসের ঝুঁকির কারন হতে পারে বলে তিনি জানান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদের বলেন, আমি এই অবৈধ নদী খনন বন্ধের জন্য
ফারুককে নিষেধ করেছি। এরপর গ্রাম প্রধানদের সাথে নিয়ে প্রতিবাদ করেছি। তারপরেও তারা তাদের বাহুবল দেখিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তমাল হোসেন বলেন, এর আগে তাদেরকে কাজ বন্ধের জন্য আদেশ দেয়া হয়েছিল। অবৈধভাবে নদী খনন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।