আজ সুন্দরগঞ্জ ট্রাজেডি ও পুলিশ হত্যা দিবস

আজ ২৮ ফেব্রুয়ারী সুন্দরগঞ্জ ট্রাজেডি ও পুলিশ হত্যা দিবসের ৭ম বর্ষপুতি। ২০১৩ সালের আজকের এই দিনে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ফাঁসির আদেশ দেয়ার পর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় শুরু হয় সাঈদী ভক্তদের নারকীয় তান্ডব। এরপর থেকে চলতে থাকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অসুন্দর কর্মকান্ড। সহিংসতায় নিহত হয়েছে ১০ জন। মামলা হয়েছিল ৩৭টি। পুলিশ হত্যাসহ সবগুলি মামলার চার্জসীট দাখিল করা হয়েছে। এতে নামী আসামি ১ হাজার ৪২২ জন, বেনামি আসামি ৬৯ হাজার ২৪৫ জন। এদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে জামিনে রয়েছে।


২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে সাঈদীর ফাঁসির রায় দেয়াকে কেন্দ্র করে গোটা উপজেলায় শুরু হয় নারকীয় তান্ডব। এক পর্যায়ে বামনডাঙ্গা রেল স্টেশনে পুলিশের সঙ্গে দুবৃর্ত্তরদের সাথে সংঘর্ষে নিহত হয় ৪ পুলিশ কনস্টোবল। পরদিন ১ মার্চ ২০১৩ সাল সকালে উপজেলার গংশার হাটে এক আ’লীগ সমর্থককে পিটিয়ে হত্যা করে দুর্বত্তরা। এর ফাঁকেই জন্ম হয় সুন্দরগঞ্জ ট্রাজেডি। এর একপর্যায়ে ১৪ নভেম্বর ২০১৩ সালে উপজেলার ডোমেরহাটে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ্ মখদুম হলের ছাত্রলীগ সভাপতি এবং ২৮ নভেম্বর ২০১৩ সালে বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের ফলগাছা গ্রামের আ’লীগ নেতা আব্দুল হালিমকে পিটিয়ে হত্যা করে দুবৃর্ত্তরা। সরকারিভাবে যেসব ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রকাশ করা হয়েছিল। বে-সরকারিভাবে এর পরিমাণ তার চেয়েও দ্বিগুণ।
নিহতদের নামঃ- বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কনস্টোবল হযরত আলী, নাজিম উদ্দিন, তোজাম্মেল হক, বাবলু মিয়া, আ’লীগ সমর্থক শরিফুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা এসএম খলিলুর রহমান মামুন, আ’লীগ নেতা আব্দুল হালিম, সত্যেন্দ্র চন্দ্র বর্মণ, শিবির কর্মী কাজী সোহানুর রহমান সোহাগ, শাহাবুল ইসলাম।


ক্ষতিগ্রস্থ প্রতিষ্ঠানসমুহ-মুসলিম দোকান ১৬২টি, হিন্দু দোকান ৬৬টি, মুসলিম বাড়ি ১২টি, হিন্দু বাড়ি ৬টি, মন্দির ৪টি, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ২টি, আ’লীগ অফিস ৪টি, জাতীয়পার্টির অফিস ১টি, জাকের পার্টি ১টি, মুক্তিযোদ্ধা অফিস ২টি, গণ উন্নয়ন অফিস ১টি, ইসলাম শিপ বিল্ডাস্ অফিস ১টি, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র ১টি, ক্লাব ২টি, বাস ১টি, রাইচ মিল ১টি, শিক্ষা সমিতি অফিস ১টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৭টি, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ৬টি, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ৬৭টি।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৮ ফেব্রুয়ারী হতে ২ মার্চ ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন ও পৌরসভা ওয়ারি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় স্থাপনা, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, বে-সরকারি অফিস, বসতবাড়ির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ১৫ লক্ষ ৫৫ হাজার ৮৯০ টাকা।


সরকারি সহায়তা প্রদান- নিহত সত্যেন্দ্র চন্দ্র বর্মণ ১০ লক্ষ, এসএম খলিলুর রহমান মামুন ১০ লক্ষ, আব্দুল হালিম ১০ লক্ষ, শরিফুল ইসলাম ১০ লক্ষ, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজা বেগম কাকলি ৫ লক্ষ, আ’লীগ নেতা গোলাম মোস্তফা বাবুল ২ লক্ষ, ছাত্রলীগ নেতা শামিউল ইসলাম ছামু ২ লক্ষ, সন্তোষ কুমার বিকাশ ৭৫ হাজার, গণেশ চন্দ্র ২০ হাজার, ভবদিশ চন্দ্র ২০ হাজার, বিনয় চন্দ্র ২৫ হাজার, দেবেন চন্দ্র ২০ হাজার, নিলুফা ২০ হাজার, মন্দির ২০ মেট্রিক টন চাল, মুক্তিযোদ্ধার অফিস ১০ মেট্রিক টন চাল, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারবর্গের বিপরীতে ২০ মেট্রিক টন চাল ও ২ লক্ষ টাকা।
থানা অফিসার আব্দুল্লাহিল জানান, সরকারি বিধি মোতাবেক এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমরা আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে সর্বদাই সচেষ্ট। অন্যায়কারিকে আমরা কখনও সায় দিব না।