টাঙ্গাইলে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা আত্মসাৎ: প্রশাসনের নিরবতায় ন্যায়বিচার অনিশ্চিত

কামরুল হাসান, টাংগাইল পতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ফুলকি মধ্যপাড়া গ্রামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার দুর্দশার করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। খোরশেদ আলম ওরফে খসরু, যিনি একসময় দেশের জন্য জীবন বাজি রেখেছিলেন, আজ ২৫ বছর ধরে প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অথচ, এই অসহায় অবস্থায় তার আপন ছোট ভাই নবাব আলী প্রতারণার মাধ্যমে তার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা আত্মসাৎ করে আসছে, যা শুধু ব্যক্তিগত লোভ নয়, বরং সমাজের নৈতিকতার ভয়াবহ অবক্ষয়ের দৃষ্টান্ত।

বহুবার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও এখন পর্যন্ত খোরশেদ আলমের পরিবার কোনো স্থায়ী সমাধান পায়নি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে একসময় নবাব আলীর ভাতা উত্তোলন বন্ধ করা হলেও তার বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

গোপন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বাসাইল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার সহায়তায় নবাব আলী পুনরায় ভাতা চালু করার ষড়যন্ত্র করছে। প্রশাসনের এই নিরবতা শুধু মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকেই নয়, পুরো এলাকাকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।

অত্যন্ত দারিদ্র্যের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন খোরশেদ আলম। পরিবার ন্যায়বিচারের আশায় এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে ঘুরলেও প্রতারকের দাপটে সুবিচার মিলছে না। তার মেয়ে দিনের পর দিন অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি। অন্যদিকে, ছোট ছেলে আব্দুল মান্নান চাচার নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে একসময় দেশ ছেড়ে বিদেশে চলে যেতে বাধ্য হন।

এ ঘটনায় পুরো গ্রাম ক্ষুব্ধ। তারা অবিলম্বে প্রতারক নবাব আলীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রতি এমন অমানবিক আচরণ সমাজের মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় প্রকাশ করে। যদি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অবহেলা ও প্রতারণা চলতে থাকে, তবে ভবিষ্যতে কেউ আর দেশের জন্য আত্মত্যাগ করতে উৎসাহী হবে না।

প্রশাসন, সমাজ ও সচেতন নাগরিকদের এখনই এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। দ্রুত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করে খোরশেদ আলমকে তার ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে সর্বমহল থেকে।