বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশে এমন
কিছু স্থাপত্য নিদর্শন বা প্রাসাদ ভবন তৈরী হয়েছে, হাজার বছর পার হওয়ার পরও তার সৌন্দর্য ও আকর্ষণে কোন কমতি আসেনি। মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন গুলো শিল্পকলা- চারুকলা এবং স্থাপত্য কলা- অলঙ্করণকলায় মান উত্তীর্ণ বলেই কাল থেকে কালান্তর স্মরণীয় হয়ে আছে । সারা বিশ্বে
ইসলাম প্রচারের সঙ্গে যুগে যুগে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে জন্ম নিয়েছেন ক্ষণজন্মা প্রতাপশালী মুসলিম শাসক ও ইসলাম অনুরাগি ব্যাক্তি। তাদের হাতে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন বিভিন্ন ইসলামিক স্থাপত্য ছড়িয়ে আছে পৃথিবীর প্রান্তে। অপূর্ব সে সব স্থাপত্যশৈলীর মধ্য রয়েছে মসজিদ, রাজপ্রাসাদ, দূর্গ , টাওয়ার সেতু সহ বিভিন্ন ধরনের
দালান। পারস্য অঞ্চলের পাশাপাশি ইসলামিক স্থাপনা গুলো গড়ে উঠেছিল
ইউরোপ থেকে দক্ষিন এশিয়া পর্যন্ত। অটোমন সাম্রাজ্যের বিস্তার ইসলামিক স্থাপনা কে নিয়ে গিয়েছিল অনন্যমাত্রায়। অগণিত মুসলিম
মহামনীষীর অক্লান্ত প্রচেষ্টার কল্যাণে বিশ্বজুড়ে আজ ইসলামের
মর্মবাণী পৌঁছে গেছে। ধর্মীয় গুরুত্বের পাশাপাশি ইসলামিক স্থাপনা গুলো সভ্যতা ও ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে দাড়িয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় ইসলামী ঐতিহ্যের আরেক নতুন নিদর্শন তৈরীী
হলো ইতিহাসবিদ ড.মুমিনুল হকের প্রচেষ্টায় বৃহত্তর সিলেটের মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার বাগাজুরা গ্রামে জলাশয়ের মধ্যে
আল্লাহর নিরানব্বই নাম সম্বলিত ভাসমান “আল্লাহু টাওয়ার”। বাংলাদেশ
তথা বিশ্বের ইতিহাসে নতুন সংযোজন এই টাওয়ার টি। ভাসমান আল্লাহু টাওয়ারের প্রতিষ্টাতা ড. মুমিনুল হকের কাছে মুঠোফোনের
মাধ্যমে ভাসমান আল্লাহু টাওয়ার সম্পর্কে জানতে চাইলে নিম্নলিখিত
তথ্য জানা যায়। তিনি বলেন ইসলামী ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য আমার
এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। টাওয়ারে নির্মাণ কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন আল্লাহর অশেষ মেহের বাণীতে ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ভিত্তি প্রস্তরের মধ্য দিয়ে টাওয়ারে ১ম পর্যায়ের কাজ আরম্ভ করি। ২৪ ডিসেম্বর টাওয়ারের মূল বেইস(২৪”*২৪”) ঢালাইয়ের কাজ আরম্ভ করা
হয়।২৮ ডিসেম্বর সাত ফুট ,পাঁচ ফুট ষোলটি পিলার সহ ব্রীজের কাজ শেষ করা হয়। বিভিন্ন ভাবে ৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন প্রায় দেড় মাস ধরে। ২৫ শে জানুয়ারি টাওয়ারে আল্লাহর নিরানব্বই নাম সম্বলিত
টাইলস স্থাপনের মধ্য দিয়ে টাওয়ার দৃশ্যায়মান হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০
মোনাজাতের মধ্য টাওয়ারটির প্রাথমিক কাজের সমাপ্তি ও সকলের জন্য
গেইটটি খোলা হয়। ড.মুমিনুল হক বলেন আমার দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন
ছিলো এরকম কিছু একটা করার ,তারই প্রতিফলন হিসাবে এই আল্লাহু
টাওয়ার। টাওয়ারটির নকশা করেছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার জামাল হক।
নির্মান ব্যয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলে আনুমানিক প্রকল্প
ব্যয় ধরা হয়েছে পাঁচ (০৫) কোটি টাকা)। তিনি বলেন প্রকল্পের কেবল
১ম পর্যায়ের ৫০% কাজ শেষ ,বাকী কাজ শেষ করেতে আরো এক(০১) বছর
সময় লেগে যাবে। তিনি বলেন আমার নিজের প্রায় সত্তর শতক ভূমির উপর
এই টাওয়ারটি নির্মিত। টাওয়ারে অবকাঠামোগত কাজ কেবল শেষ
হয়েছে। এখনো শোভা বর্ধনের কাজের মধ্যে জলাশয়ের চারপাশে
কারুকার্যের কাজ বাকী রয়েছে,পকুরে মধ্যে সৌখিন বিভিন্ন
প্রজাতির মাছ থাকবে,বিভিন্ন রংয়ের শাপলা ফুল থাকবে। দর্শনার্থীদের
জন্য জলাশয়ে নৌকা থাকবে টাওয়ারে চারপাশ ঘুরে দেখার জন্য। তাছাড়া
শিশুদের জন্য শিক্ষনীয় খেলার সামগ্রী থাকবে জলাশয়ের চারপাশের দেয়াল ও
খোলা জায়গা জুড়ে। ড.মুমিনুল হক বলেন- আশা রাখি আল্লাহর রহমতে
২০২১ সাল নাগাদ ভাসমান আল্লাহু টাওয়ারে কাজ সমাপ্ত করা যাবে। এ
ব্যাপারে তিনি সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী, যাতে তিনি দ্রুততার
সাথে টাওয়ারটির কাজ শেষ করতে পারেন।