সুরভি জোয়ার্দ্দার পাবনা শহরের দিলালপুর মহল্লা’র সরকারি মহিলা কলেজ পাড়ায় ১৯৭৩ খ্রি. জন্ম গ্রহন করেন। পিতা ছিলেন বিশিষ্ট সঙ্গীত গুরু শম্ভু জোয়ার্দ্দার।
পিতা-মাতা, চার বোন আর এক ভাই নিয়ে ছিল তাদের সুখের পরিবার। শহরের প্রধান আব্দুল হামিদ সড়কে “পাবনা টাউন গার্লস হাই স্কুল” এ তার প্রথম লেখাপড়ার হাতেখড়ি শুরু হয়। তারপর ১৯৮৭
খ্রি. তিনি পাবনা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পরীক্ষায় পাস করেন। স্কুল জীবনেই তিনি সংস্কৃতি ও সাহিত্য অনুরাগী হয়ে উঠেন। কেননা তার পিতা শম্ভু জোয়ার্দ্দার ছিলেন ঐ সময়ের খ্যাতিমান সঙ্গীত গুরু। তাই ছোট থেকেই সংস্কৃতি তার রক্তে মিশে ছিল। তিনি স্কুল জীবন থেকে লেখালেখি শুরু করেন। তারপর তিনি পাবনা সরকারি মহিলা
কলেজে এইচ.এস.সি তে ভর্তি হন। পাবনা শহরের বিভিন্ন দেয়াল পত্রিকা, কলেজ ম্যাগাজিনে তার লেখা প্রকাশ হতে থাকে। এরপর নিয়মিত কবিতা প্রকাশিত হতো কয়েকটি জাতীয় প্রত্রিকা ও দৈকিন বিচিত্রায়। সরকারি মহিলা কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে পাস করে তিনি সরকারি
এডওয়ার্ড কলেজে বিএ কোর্সে ভর্তি হন। ১৯৯৭ খ্রি. তিনি পাবনা আমিন উদ্দিন আইন কলেজে ভর্তি হন। আইন কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি পাবনা আদর্শ মহিলা কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯৯৮ খ্রি. জাহাঙ্গীর প্রধান এর সাথে পারিবারিক সুত্রে সুরোভী
জোয়ার্দ্দার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নতুন সংসার জীবন শুরু এবং স্বামীর কর্মজীবন এ দুয়ের কারণে সুরোভী কে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। তাদের সংসারে আসে মাহিরা বিনতে নামে নতুন অতিথি। ব্যস্ততা আরও বেড়ে যায়। স্বামী সন্তান সংসার এর ব্যস্ত জীবন নিয়ে ঢাকা’র মিরপুর
তাকে বসবাস করতে হয়। থমকে গেল আইন কলেজের পড়াশোনা। কিন্তু মনে যার অদম্য সাহস আর নবদিগন্তের উদ্দিপনা, তাকে কে আটকায়। আইন পড়াশোনা বন্ধ হলেও তিনি পরিবারের ব্যস্ততার মাঝেও পুনরায় ঢাকা কলেজে মাস্টার্স ডিগ্রিতে ভর্তি হন। ঢাকা কলেজ থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করার পর তিনি মিরপুর “মর্ডাণ প্রিপ্যারোটরী স্কুলে” অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। পাশাপাশি তিনি ম্যাবস স্কুল এন্ড কলেজের অতিথি শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি পুণরায় নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন। এরপর অনলাইন
ভিত্তিক গ্রুপ গুলোতে সুনামের সাথে কবিতা আর ছোটগল্প প্রকাশিত হচ্ছে। অনলাইন ভিত্তিক কোলকাতা “আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য একাডেমী “কলকাতা থেকে ২০১৮ খ্রি. সোমেস্বর
দেব সরকারের সম্পাদনায় গ্রুপ কাব্য সংকলন “কাব্য তরী” প্রকাশিত হয়। এছাড়া জনপ্রিয় নিউজ পোর্টাল “সব খবরের সুবাদে”, সর্বভারতীয় জনপ্রিয় পোর্টাল ডেইলি হান্টে তার কবিতা,
গল্প ও বিভিন্ন ধরনের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। যার সুবাদে তিনি এ পর্যন্ত ২৮ বার সর্ব ভারতীয় ন্যাশনাল পেয়েছেন। কলকাতার” গায়ত্রী দেবী” ট্রাষ্টের পক্ষ থেকে ২০১৮ সালে ” স্বপ্নের দেশ
” থেকে সুরোভী জাহাঙ্গীর কে বর্ষসেরা সাহিত্যিক হিসেবে মীর্জা মতিন স্যার
সার্টিফিকেট পদক প্রদান কের সম্মানিত করা হয়। “বঙ্গবন্ধু” ১০তম উৎসবে “কবি সংসদ বাংলাদেশ” এর পক্ষ থেকে তাকে সাহিত্যিকের সম্মান দিয়ে “বঙ্গবন্ধু” পদক প্রদান করা হয়।
তিনি মানুষের সাথে হাসিমুখে কথা বলতে খুব পছন্দ করেন। আবৃত্তি শোনা এবং আবৃত্তি করা, গান শোনা, চিত্রাঙ্কন, সুই সুতার রং-বেঙের কাজ তার খুবই প্রিয়। ভালবাসেন প্রকৃতির
বুকে হারিয়ে যেতে। আবার নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করতে। অনেক বছর ঢাকায় বসবাস করার কারণে তার প্রিয় শহর ঢাকা। এখন তিনি ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বসবাস করেন। আর পাবনা শহর, তার হৃদয় স্পন্দনে শিরা-উপশিরায় প্রতিটি রক্ত কণিকায় মিশে আছে।