আজ শুক্রবার মহান ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। জাতিসংঘের উদ্যোগে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ভাষা শহীদদের স্মরণে দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালিত হবে। মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৬ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। বাঙালি জাতির জন্য এই দিবসটি হচ্ছে চরম শোক ও বেদনার, অনদিকে মায়ের ভাষা বাংলার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত।
আজ সবার সব পথ এসে মিলে যাবে এক অভিন্ন গন্তব্য—শহীদ মিনারে। হাতে হাতে বসন্তে ফোটা ফুলের স্তবক, কণ্ঠে নিয়ে চির অম্লান সেই গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী/ আমি কি ভুলিতে পারি…’ ধীর পায়ে এগিয়ে যাবে আবালবৃদ্ধবনিতা। ভাষাশহীদদের প্রতি নিবেদিত শ্রদ্ধার ফুলে ফুলে ঢেকে যাবে শহীদ মিনারের বেদি। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
বাংলা মায়ের বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার্থে আজ থেকে ৬৮ বছর আগে ১৯৫২ সালের এই দিনে বুকের রক্তে রঞ্জিত করেছিলেন ঢাকার রাজপথ। পৃথিবীর ইতিহাসে সৃষ্টি হয়েছিল মাতৃভাষার জন্য আত্মদানের অভূতপূর্ব নজির।
মাতৃভাষার জন্য বাঙালির আত্মদানের এই অনন্য ঘটনা স্বীকৃত হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। আজ বাঙালির সঙ্গে সারা বিশ্বেই দিনটি পালিত হচ্ছে।
বরাবরের মতোই এবারও মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি শুরু হয় গতকাল শুক্রবার বিকেল থেকেই। দোয়েল চত্বর, চানখাঁরপুল, টিএসসি, পলাশী মোড় থেকে শহীদ মিনারগামী পথগুলো যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসব পথে ঐতিহ্যবাহী আলপনা আঁকতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নবীন আঁকিয়েরা।
দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বের সব ভাষাভাষীর প্রেরণার উৎস। পৃথক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব ভেদাভেদ ভুলে একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাঁর বাণীতে বলেছেন, ‘আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি এখনো বিজাতীয় আগ্রাসন থেকে মুক্ত হয়নি।’
আজ সরকারি ছুটির দিন। দেশের সর্বত্রই আজ প্রভাতফেরি করে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে শহীদদের স্মৃতির প্রতি। সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।