মাস্টার রোল কর্মচারীদের নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকলেও নিয়ম লঙ্ঘন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারা নতুন নিয়োগে আগ্রহী। অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রভাব, তদবির ও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে চাকরি স্থায়ী হচ্ছেনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ যুগের বেশি সময় ধরে কর্মরত প্রায় ২৮০ জন মাস্টাররোল কর্মচারির। পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাদের।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় বিশ^বিদ্যালয় শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে মাস্টাররোল কর্মচারি ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন তারা। অভিযোগ করেন, তাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়ে আছে তবুও বিমাতা সূলভ আচরণ করছে প্রশাসন।
এসময় লিখিত বক্তব্যে পরিষদের মুখপাত্র মাসুদুর রহমান বলেন, বিশ^বিদ্যালয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অনুমোদিত ও বিশ^বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) অর্গ্রাণোগ্রামে বাজেটপ্রাপ্ত হয়েও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাবে ও রাজনৈতিক বেরিয়ারের আবদ্ধ থেকে প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ২৮০ জন কর্মচারি স্থায়ী নিয়োগ পায়নি। অন্যদিকে বিভিন্ন সময় সিন্ডিকেটে দেড় হাজারেরও বেশি জনবল নিয়োগ দিলেও চাকরি স্থায়ী হয়নি আমাদের।
তিনি আরো বলেন, ২০০৮ সালে কেয়ারটেকার সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে আইন পাশ হয়। এতে স্থায়ী নিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে নিয়োগ প্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। সংশোধিক বাজেটে ইউজিসি আমাদের জন্য ১ কোটি ২ লক্ষ ৪১ হাজার ১শত টাকা বরাদ্দ দিয়ে আসছেন। আমরা লক্ষ্য করেছি বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয়ের সকল মাস্টারোলের কর্মচারিদের ৮০% বকেয়া বেতন-ভাতাসহ চাকরি ইতোমধ্যই স্থায়ীকরণ করেছে। শিক্ষা মন্ত্রলালয় যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তা রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয় এবং ইউজিসি মানতে বাধ্য। আমরা মনে করি বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইন লঙ্ঘন করেছেন এবং আইন বিরোধী কাজ করে যাচ্ছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে তারা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দুই দফা দাবি পেশ করেন- বিশ^বিদ্যালয় যোগদানের তারিখ থেকে আমাদের চাকরি স্থায়ী করতে হবে, অবিলম্বে যাবতীয় বকেয়া বেতন-ভাতা এরিয়া আকারে প্রদান করতে হবে।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণাও দেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে মাস্টারোল কর্মচারী ঐক্য পরিষদের প্রায় শতাধিক কর্মচারি উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচর্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় মাস্টারোল কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। সুরাহার জন্য একইদিন সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯৭তম সিন্ডিকেটে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করলে আন্দোলন স্থগিত করা হয়। পরে কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিষয়টি সুরাহার জন্য সময় বেধে দেয়া হয়। কিন্তু সাত কার্যদিবসেও বিষয়টি সুরাহা করেনি প্রশাসন। দাবি আদায়ে টানা ১০ দিন আন্দোলন অব্যাহত রেখে গতকাল সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন ভবন ঘেরাও করে তারা।