ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটিতেই নৌকার জয়

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বেসরকারি ফলাফলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে দুই সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তারা ফল ঘোষণা করেন।

প্রথমে রাত সাড়ে ১২টা ৩৯ মিনিটে ঢাকা দক্ষিণ সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে দক্ষিণের মেয়র পদে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। ডিএসসিসি নির্বাচনে শেখ ফজলে নূর তাপস পেয়েছেন ৪ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইশরাক হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ৩৬ হাজার ৫১২ ভোট। অর্থাৎ তাপস তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে এক লাখ ৮৮ হাজার ৮৩ ভোট বেশি পেয়েছেন।

ডিএসসিসি নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ২৯ শতাংশ।

এরপর, রাত পৌনে তিনটায় ঘোষণা করা হয় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ফল। এই সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫০ ভোটে হারিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। রাত পৌনে তিনটায় রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ডিএনসিসি রিটার্নিং কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যুগ্ম সচিব মো. আবুল কাসেম ডিএনসিসি মেয়র হিসেবে আতিকুল ইসলামকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন।

নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম পেয়েছেন ৪ লাখ ৪৭ হাজার ২১১ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকের তাবিথ আউয়াল পেয়েছেন ২ লাখ ৬৪ হাজার ১৬১ ভোট। রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, ডিএনসিসি নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ২৫.৩০ শতাংশ।

এর আগে, নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বৈঠক পরবর্তী এক অনানুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন, ভালো হয়েছে। আমরা বড় ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি।

ডিএনসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে ছয় প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শেখ মো. ফজলে বারী মাসউদ হাত পাখা প্রতীকে পেয়েছেন ২৮ হাজার ২০০ ভোট , প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি-পিডিপির শাহীন খান বাঘ প্রতীকে ২ হাজার ১১১ ভোট পেয়েছেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির-এনপিপির মো. আনিসুর রহমান দেওয়ান আম প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৫৩ ভোট ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির আহম্মেদ সাজ্জাদুল হক কাস্তে প্রতীকে পেয়েছেন ১৫ হাজার ১২২ ভোট।

এ সিটিতে মোট ভোটার রয়েছেন ৩০ লাখ ১২ হাজার ৫০৯ জন। ভোট পড়েছে ৭লাখ ৬২ হাজার ১৮৮ টি। অর্থাৎ প্রদত্ত ভোটের হার ২৫ দশমিক ৩০ শতাংশ।

এ সিটি নির্বাচনে বাতিল ভোটের সংখ্যা ১ হাজার ৫৩০টি।

২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিলে এ সিটির নির্বাচনে ব্যবসায়ী নেতা আনিসুল হক মেয়র পদে জয়লাভ করেছিলেন। তার মৃত্যুতে আসনটি শূণ্য হলে উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে জয় পেয়ে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ১ বছরেরও কম সময়ের জন্য নগরপিতা হন আতিক।

মেয়াদ পূর্তির আগের ছয় মাসের মধ্যে ভোট গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থাকায় পদত্যাগ করেই তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়।

গত ২২ এপ্রিল নির্বাচন তফসিল দিয়ে ৩০ জানুয়ারি ভোটের তারিখ দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। তবে সরস্বতি পূজার্থীদের দাবির মুখে একদিন দু’দিন পিছিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি ভোট আয়োজন করে সংস্থাটি।

এবার প্রথমবারের মতো বিভক্ত ঢাকার দুই সিটিতে একযোগে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকেই বিএনপি প্রার্থীদের অভিযোগ, সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ইভিএম বিভ্রাট, এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়া, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

অন্যদিকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজধানীতে হরতাল ডেকেছে বিএনপি।