নাজিম হাসান,রাজশাহী প্রতিনিধি:
সরকারী খাস জমিসহ জনসাধারণের জমিতে সমবায়ের ভিত্তিতে চুক্তিবদ্ধ হয়ে মাছ চাষ শুরু করে বিলকালাই মৎস্যজীবী প্রকল্প লিঃ। সরকারী খাস জমি লীজ গ্রহণ করলেও বিলের আশপাশের কৃষকের নিকট থেকে জমি নিয়ে বৎসর ভিত্তিক চুক্তি করে মাছ চাষ শুরু করে ওই প্রকল্পের লোকজন। তিন বছর পার হলেও ওই সকল জমির মালিকরা তাদের জমির কোন মূল্য পাইনি। বিলকালাই মৎস্যজীবী প্রকল্পের লোকজনের কাছে একাধিক বার বলেও কোন টাকা পাচ্ছে না জমির মালিকরা। দিবো দিচ্ছি বলে পার করলো তিন বছর। শেষমেষ নিরুপায় হয়ে জমির মালিকরা মঙ্গলবার বিলকালাই বিলে নিজের জমিতে নিশানা টানান। এ নিয়ে বিলের অন্য জমির মালিকদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মতো শতশত জমির মালিক এভাবেই জমির দখলে নামবেন বলে জানা গেছে। সরকারী খাস জমি লীজ নিলেও সাধারণ কোন কৃষকের জমির টাকা পরিশোধ করা হয়নি। ঘটনাটি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বিল কালাই বিলে। তিন বছর জমির টাকা না পেয়ে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে সাধারণ লোকজনের মাঝে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যে সকল জমিতে সেচের মাধ্যমে বোরোর আবাদ হয় সে সকল জমিতে বিনামূল্যে ফসল ফলানোর জন্য প্রকল্পের পক্ষথেকে পানি সেচের ব্যবস্থা করে দেন। বিলের উপরের অর্থাৎ আবাদী জমিতে সেচের ব্যবস্থা করলেও যে সকল জমিতে সারা বছর পানি থাকে সেগুলোর টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে না। প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এভাবে মাছ চাষ করায় যেকোন মহুর্তে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে মচমইল গ্রামের মরহুম চেয়ারম্যান শহীদ গোলাম রব্বানীর ছেলে আশিকুর রহমান সজল, সিরাজুল ইসলাম, বাইগাছা গ্রামের আহসান হাজী সহ অনেকেই একই কথা বলেন। প্রতি বছরের টাকা মাছ চাষ শুরুর আগেই দেয়ার কথা থাকলেও সেটা মানা হয়নি। এ বছরের টাকা নিতে গেলেও প্রকল্পের সদস্যরা জমির মালিককে পরিশোধ করছেন না। বিল কালাই বিলে মাছ চাষ নিয়ে এর আগেও অনেক রক্তক্ষয়ি সংঘর্ঘের ঘটনা ঘটেছিল। আবারও সে রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। কোনরুপ সংঘর্ষ সৃষ্টি আগেই যেন জমির মালিকরা তাদের জমির টাকা পায় সে জন্য বাগমারা আসনের সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সুষ্ঠু ভাবে জমির টাকা বুঝে না পেলে যেকোন অঘটন ঘটতে পারে। অন্যদিকে বিলে নিশানা টানানোর পরে মরহুম চেয়ারম্যান শহীদ গোলাম রব্বানীর ছেলে আশিকুর রহমান সজলের নিকট প্রকল্পের পক্ষ থেকে নাম মাত্র টাকা এবং চুক্তির কাগজপত্রাদী নিয়ে হাজির হয় লোকজন। সজল জানায়, সাধারণ জমির মালিকের টাকা আগে পরিশোধ করেন আমারটা নিয়ে ভাবতে হবে না। এ ব্যাপারে বিলকালাই মৎস্যজীবী প্রকল্পের সভাপতি শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি, চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম প্রামানিক মুঠোফোনে বারবার চেষ্টা করা হলেও বন্ধ পাওয়া যায়। অপরদিকে প্রকল্পের সেক্রেটারী বয়েন উদ্দীন বলেন, তিন বছর থেকে মাছ চাষ হলেও প্রথম বছর বাঁধ ভেঙ্গে বন্যার পানি প্রবেশ করে ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে পড়ে প্রকল্পের লোকজন। তবে এ বছর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জমির মাপজোক করে বিগত দুই বছরের টাকা দেয়া হবে।