লালমনিরহাটঃ প্রতিনিধি।। দীর্ঘ চার মাস ধরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া অন্তঃসত্তা নারীর(১৮) পরিচয় খুজছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ চার মাস আগে সন্ধ্যায় লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের ভিতরের গেটে পলিথিনের উপর শুয়ে থাকা অজ্ঞাত নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন সিনিয়র স্টাফ নার্স চামেলী বেগম। পরে কয়েক দিন চিকিৎসার পরে নিরুদ্দেশ হলেও পুনরায় হাসপাতালে ফিরেন ওই নারী। বর্তমানে সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার গাইনী ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে কর্মরত নার্স ও চিকিৎসকরা অনেক ভাবে পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।
হাসপাতালে সরকারী সহায়তার পাশাপাশি তাকে আর্থিক ভাবে ঔষধ ক্রয়সহ অন্যান্য সহায়তা করছে সমাজ সেবা অধিদফতর। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তার শারীরিক পরীক্ষা নীরিক্ষা করে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হয়েছেন ওই নারী গর্ভবতি হয়েছেন। আগামী মার্চ মাসে তিনি সন্তান প্রসব করবেন বলে আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হয়েছেন। ওই নারী কথা কম বললেও নিজের পরিচয় দিতে ভয় পাচ্ছেন। কখনই তিনি নাম বা পরিচয় বলেন না। সকলের কথা বুঝতে পেলেও কোন উত্তর করেন না। তবে সমাজসেবা কর্মীদের ধারনা বড় ধরনের কোন মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আতংকিত হয়ে ওই নারী মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। এখন দরকার তার পরিবারের আপনজনের পরিচর্যা। তার পরিচয় সানাক্ত করে উপযুক্ত চিকিৎসা দেয়া হলে মানসিক ভাবে তাকে সুস্থ করা যাবে। তাই তার পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা করছে সমাজসেবা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী অবিবাহিত অথবা সদ্য বিবাহিত ধারনা করে সমাজসেবা তার পরিচয় সনাক্তে এবং তার সমস্যা জানতে নারী সমাজকর্মী নিয়োগ করে উপযুক্ত কাউন্সিলিং করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সদর হাসপাতালের গাইনী ওয়ার্ডের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স চামেলী বেগম বলেন, হাসপাতালে গেটে শুয়ে থাকা ওই অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ভর্তি করেছি। তিনি মার্চে সন্তান প্রসব করতে পারেন। নিবিড় পরিচর্যা করা হচ্ছে। তবে তার পরিচয় সনাক্তের অনেক চেষ্টা করেছি, পারি নেই। কথা খুবই কম বলেন। কিছু বললে হাসি দেন। কারো ক্ষতি করেন না। কেউ স্বেচ্ছায় কিছু না দিলে যতই প্রয়োজন হোক, নেয় না। কেউ তাকে চিনে থাকলে হাসপাতালে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করেন নি। লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের সমাজসেবা অফিসার এরশাদ আলী বলেন, হাসপাতালের বাহিরে ঔষধ বা পরীক্ষা নিরীক্ষা এমনকি পোশাকও সরবরাহ করা হচ্ছে সমাজসেবার মাধ্যমে। বড় ধরনের মানসিক আঘাতের কারনে ওই নারীর এ অবস্থা হতে পারে। আমরা নারী সমাজকর্মী দিয়ে কাউন্সিলিং করে তার পরিচয় বের করার চেষ্টা করছি। যতদিন হাসপাতালে চিকিৎসা চলবে ততদিন তাকে সহায়তা করবে সমাজসেবা।