রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির নীতিমালা না মেনে আবেদন করেও বিভাগে প্রভাষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন রেজভী আহমেদ ভুঁইয়া। রোববার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনে অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎকার ও সন্ধ্যায় সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগ বোর্ডের তিন জন সিন্ডিকেট সদস্য আপত্তি তুললেও এই নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
রেজভী আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোনমী এন্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ‘বিশেষ সুবিধা’ দিয়ে তার আবেদন গ্রহণ করেছে ও নিয়োগ দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ প্ল্যানিং কমিটির কয়েকজন সদস্য। সেইসঙ্গে এই নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে বলেও তারা মন্তব্য করেছেন।
শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, গতবছরের ৩০ জুলাই সহকারী অধ্যাপক (প্ল্যান্ট প্যাথোলজি), প্রভাষক (এগ্রিকালচারাল কেমিস্ট্রি) ও প্রভাষক (এগ্রোনমী) তিনটি পদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুসারে অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলা হয়৷
সেইসঙ্গে ৮ আগস্টের মধ্যে ৯ সেট দরখাস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরে জমা দিতে বলা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রীধারীরাই শুধু আবেদন করতে পারবে বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে রেজভী আহমেদ ভুঁইয়ার বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির দুই মাস পর অর্থাৎ ৩ নভেম্বর তারিখে তার স্নাতকোত্তর পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়।
বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির সদস্য অধ্যাপক আলী আসগর বলেন, ‘যেহেতু আবেদনের শেষ সময়ের মধ্যে রেজভী আহমেদের মাস্টার্সের রেজাল্ট হয়নি। তাহলে সে স্বাভাবিকভাবেই আবেদন করতে পারে না। তার আবেদনের যোগ্যতা নেই। প্রথমেই তার আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিয়ম ভঙ্গ করে তাকে নিয়োগ দিয়েছে।’ পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে এই নিয়োগে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক আব্দুল আলীম ও মনিরুল হক বিপক্ষ অবস্থান নিয়েছেন বলে জানা গেছে। সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক হাবিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এবিষয়ে ক্রপ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ফারুকী বলেন, ‘রেজভী নামের ওই শিক্ষার্থী সঠিক সময়ে আবেদন করেছেন। তবে আবেদনের সময় তার কাগজপত্রে কিছু ত্রুটি ছিল। পরে উপাচার্যের সুপারিশে তিনি আবেদনের শেষ সময়ের দুইমাস পর রেজিস্ট্রার দপ্তরে সেগুলো জমা দিয়েছেন।’
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ও রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এম এ বারীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।
প্রসঙ্গত, গত রোববার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বাসভবনে অনুষ্ঠিত ৪৯৭তম সিন্ডিকেট সভায় ক্রপ সায়েন্স বিভাগের তিন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগপ্রাপ্তরা হলেন, শামসুন্নাহার, মোক্তার হোসেন এবং রেজভী আহমেদ ভুঁইয়া।