কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুড়া ইউনিয়নের সীমান্তর্তী গৌরীপুর সেতুসংলগ্ন থেকে তারানগর পর্যন্ত তিন কিলোমিটার দৈর্ঘ্য স্বেচ্ছাশ্রমে এ রাস্তা বানিয়েছেন গৌরীপুর, তারানগর, বালুচরা, কেবালপুর, এয়ারপুর, ভবানীপুর, গোরাগাঁও, চৈতনগরসহ সাতটি গ্রামের লোকজন।
সরকারি বরাদ্দের আশায় বসে না থেকে গত শনিবার সকাল থেকে গ্রামগুলোর আদিবাসী নারীসহ কিশোর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, যুবক, বৃদ্ধ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ¯্রাধিক লোকজন সড়ক নির্মাণে মাটি কাটার কাজ শুরু করেন। এ নিয়ে গত রোববার যুগান্তর প্রিন্ট ভার্সনে ‘কলমাকান্দায় স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তার নির্মাণ কাজ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গ্রামের বাসিন্দারা জানান, রাস্তাটি নির্মাণের জন্য এলাকার লোকজন বিগত সময়ে স্থানীয় এমপি, চেয়ারম্যান ও সরকারি দপ্তরে বহুবার যোগাযোগ করেছেন। নির্বাচনের সময় রাস্তা তৈরির প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে আর কেউ খোঁজ খবর নেয়নি। অবশেষে লেংগুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান ভূঁইয়া উদ্যোগ নিয়ে নিজেরাই ওই রাস্তার নির্মাণকাজ বুধবার শেষ করেছেন। এই রাস্তার কারণে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে দুর্ভোগের যেন শেষ ছিল না। শিক্ষার্থীরা পায়ে হেঁটে অনেক দূরে স্কুল-কলেজে যেতে হত। আর গ্রামের কৃষকদেও তাদের উৎপাদিত ফসল কম দামে বিক্রি করতে হত।
লেংগুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ থেকে চাহিদামত উন্নয়ন কর্মকান্ড করা সম্ভব হয় না। সরকারিভাবে সড়ক নির্মাণের অর্থ না পাওয়ায় জনগণের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে তাঁদেরকে সঙ্গে নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে এই তিন কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ করেছি। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
বালুচড়া সেক্রেট হার্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া আক্তার জানায়, ‘রাস্তা না থাকায় এত দিন বাড়ি থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরে আমাদের স্কুলে যেতে হতো। পায়ে হেঁটে গেলে স্কুলে যাওয়া-আসা করতেই দুই ঘণ্টার বেশি সময় চলে যায়। কিন্তু এখন মাত্র কিছুটা পথ পাড়ি দিলেই স্কুলে পৌঁছে যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানা বলেন, গত মঙ্গলবার স্বেচ্ছাশ্রমে নবনির্মিত রাস্তাটি দেখে এসেছি। এটি একটি সুন্দর ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ। চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানকে সাধুবাদ জানাই। এ ভাবে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে উদ্যোগী হয়ে ভালো কাজ করলে একটি সত্যিকারের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, এই সড়কটি পাঁকাকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বরাবর প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।