পশুপাখির খামারে ভরে উঠছে তিস্তার চরাঞ্চল



দফায়-দফায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার পরও চরাঞ্চল ছাড়তে চায় না চরবাসীরা। কারণ চর যেন তাদের জন্য আর্শিবাদ স্বরুপ। শুধুমাত্র বন্যার সময় একটু কষ্ট সইতে হয় চরবাসীকে। তারপর তিস্তার চরাঞ্চলে সোনা ফলায় তারা। বর্তমানে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের বসবাসরত প্রতিটি পরিবারে রয়েছে ২ হতে ১০ করে গরু এবং ছাগল। আবার অনেকে দিয়েছে মিনি খামার। গরু ও ছাগল প্রেমি কৃষক এবং খামারিরা প্রতিবছর আয় করছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এছাড়া ভরা তিস্তার মরা চরের ধু-ধু বালুচরের বুকে ফলাচ্ছে নানাবিধ ফসল। তিস্তার চরাঞ্চলে যেন নিবর গরুসহ গৃহপালিত পশুপাখির খামারে ভরে উঠেছে। চরের প্রতিটি পরিবারের একমাত্র সম্বল গৃহপালিত পশু পাখি। সাধ্য অনুযায়ী চরবাসী গরু, ছাগল, ভেড়া, হাস, মুরগি ও কবুতর লালন পালন করে থাকেন। অনেকে বেসরকারি বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার নিকট থেকে লোন নিয়ে গরু ও ছাগলের খামার দিয়েছে। নিজের শরীরের চেয়ে তারা গৃহপালিত পশু পাখির যন্ত বেশি নিয়ে থাকেন। কথা হয় কাপাসিয়া ইউনিয়নের বাদামের চরের আনছার আলীর সাথে। তিনি প্রতি বছর কোরবানির ঈদে তিনি ২ হতে ৫টি গরু ও ৩ হতে ৬টি করে ছাগল বিক্রি করে থাকেন। এক বছর পর্যন্ত একটি গরু ও ছাগল লালন পালন করার পর সেটি বিক্রি করে দিয়ে আবার নতুন করে গোয়াল ঘরে গরু ও ছাগল লালন পালন শুরু করে। বর্তমানে গো-খাদ্য হিসেবে ধানের খঁড় খুব একটা বেশি লাগে না। বাজার থেকে বিভিন্ন ফিড কিনে নিয়ে গিয়ে তা দিয়ে গরু, ছাগল মোটা তাজা করছে চরবাসি।
উপজেলার সখের বাজার গ্রামের শাহিনুর বেগমের খামারে রয়েছে ২০টি ষাড় গরু। যার প্রত্যেকটির দাম প্রায় ৮০ হাজার হতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা হতে পারে। শাহিনুর ওই গ্রামের বাদশা মিয়ার স্ত্রী। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা এসকেএস ফাউন্ডেশনের এমএম ডাবিøউ ডাবিøউ প্রকল্পের সদস্য শাহিনুর। তিনি সংস্থার সহায়তা নিয়ে খামার দিয়েছে। প্রতিবছর তার আয় হয় ২ হতে ৩ লাখ টাকা।
উপজেলার হরিপুর ইউপি চেয়ারম্যান নাফিউল ইসলাম জিমি জানান, তার ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ড চরাঞ্চল। চরাঞ্চলের প্রতিটি পরিবারে রয়েছে ২ হতে ১০টি করে গরু ও ছাগল। তিনি বলেন উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলে কমপক্ষে ৫০ হাজার গরু ও ছাগল রয়েছে। চরাঞ্চল যেন নিরব গৃহপালিত পশু পাখির খামারে ভরে উঠেছে।
উপজেলা ভেটেরেনারি সার্জন ডাক্তার রেবা বেগম জানান, চরের কৃষকরা প্রত্যেকে গরু ও ছাগল লালন পালন করে থাকে। গৃহপালিত পশু পাখি তাদের একমাত্র সম্বল। এক বছর গরু ও ছাগল লালন পালন করে তা বিক্রি করে থাকেন চরবাসী।