দিনভর চলা জল্পনাই হল সত্যি। প্রধানমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে তার ক্ষোভের কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে এনপিআর নিয়েও তাঁর আপত্তির কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। শনিবার বিকেলে রাজভবনে একান্ত বৈঠক হয় মোদী-মমতার।
বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ কলকাতায় নামেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমানবন্দর থেকে চপারে রেসকোর্সে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে সড়কপথে যান রাজভবনে। বৈঠকের জন্য আগে থেকেই রাজভবনে পৌঁছে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় মোদী-মমতার। বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রীকেও নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে এনপিআর নিয়েও তাঁর আপত্তির কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের পাওনা টাকা নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। বিভিন্ন খাতে পাওনা টাকার পরিমাণ ২৮ হাজার কোটি। বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতি বাবদ ৭ হাজার কোটি টাকাও পাওনা আছে। দ্রুত সেই বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’
এছাড়াও নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি ও এনপিআর নিয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। রাজভবনে মোদীর সঙ্গে বৈঠকে সিএএ, এনআরসি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে আমাদের বক্তব্য জানিয়েছি। মানুষে-মানুষে বৈষম্য চাই না। সেকথা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি। আমরা যে সিএএ ও এনআরসির বিরুদ্ধে সেটাও প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বাতিলের দাবি জানিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে।’
শনিবার দিনভর বিকেলের মোদী-মমতা বৈঠকের দিকেই নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের। সিএএ ও এনআরসি বিরোধিতায় যখন লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী, ঠিক সেই আবহেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর একান্ত বৈঠককে কটাক্ষ করেছে বামেরা। বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে গোপন সমঝোতা রয়েছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম।