শফিক আল কামাল (পাবনা) ॥ রহু চন্ডালের হাড় নাকটটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠির সমষ্টিক মানুষের গল্প। রহু চ-াল চরিত্রটি একটি সম্প্রদায়, জনগোষ্ঠীর। যারা উত্তর ভারতের এক অঞ্চল থেকে বাসচূত্য হয়ে ক্রমাগত পূর্বের দিকে চলে। সেখানেও সে ভাল প্রশান্তি ও উত্তর খুজে পায় না। তার ক্রমাগত চলার পথে অবিভক্ত ভারতবর্ষে কোম্পানীর শাসন আমল, উপনিবেশিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা, অর্থনীতি, সাঁওতাল বিদ্রোহ, পুলিশ আইন বিচার ব্যবস্থা সম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রভৃতি প্রতিফলিত হয়।
তার ক্রমাগত স্থান পরিবর্তনের ফলে শেয়ালদহ, মনিহারিহাট, হরিশচন্দ্রপুর, মালদা, রাজশাহী, আমুনাড়া, পাঁচবিবি রংপুর নমনকুড়ি প্রভৃতি অঞ্চল কাহিনীতে ঘটনাস্থল রুপে উপস্থিত হয়। নাটকটিতে প্রতিটি চরিত্রই স্বতন্ত্র অভিনয়ের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। ভারতবর্ষের দেড়শো বছরের ইতিহাসে বাজিকরদের পরিক্রমন। এখানে বাজিকর চরিত্রকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। নানা রকম অবিশ্বাস্য অলৌকিতার পসরা নিয়ে বাজিকর পথে পথে ঘোরে। তার সাথে ঘোড়া মহিষের দল এবং অলৌকিক শক্তির আধার রহু চ-ালের হাড়। কাহিনীতে সাওতাল বিদ্রোহ জড়িয়ে পড়ে বাজিকর। সেই সাথে রেষানলে পড়ে ইংরেজ শাসনের। ইংরেজ হাতে তাদেরকে নানা নির্যাতনের স্বীকার হতে হয়। তারপর বুনো ধানের চাষ শিখে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখে বাজিকর বংশক্রম। তাদের মেয়েদের ধর্ষণ করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় বাড়িঘর। পুড়ে যায় পোষা পশুরা। এমনকি পুরুষদেরকেও খুন করা হয়। কিন্তু তাদের পথ চলা থেমে নেই। নানা চড়াই উৎরাই পেড়িয়ে এভাবেই তারা ছুটে চলে…..
অভিজিৎ সেন এর উপন্যাস অবলম্বনে রেজা আরিফ’র নির্দেশনায় রহু চ-ালের হাড় নাটকটি শুক্রবার (১০’’জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র’র অডিটোরিয়ামে মঞ্চায়ন করা হয়। এ নাটকের সমন্বয়কারী ছিলেন এ্যাড. আব্দুল হান্নান শেলী। পাবনা’র সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চায় বনমালী শিল্পকলা কেন্দ্র পাবনা’র সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ও রুদ্র কনস্ট্রাকশন লিঃ-এর পৃষ্ঠপোষকতায় নাটকটি পরিবেশানা করেন আরশি নগর ঢাকা।